এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : জয়পুরহাটের কালাইয়ে গত কয়েক দিনের অব্যাহত ঘন কুয়াশা ও কনকনে তীব্র শীতের সাথে শৈত্য প্রবাহের কারণে আলু ক্ষেতে ব্যাপক হারে আলুর মড়ক রোগ দেখা দিয়েছে। এতে করে এলাকার কৃষক চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
ফলে ওই রোগের কারণে আলুর পাতায় কালো ফোসকা পড়ে মরে যাচ্ছে তরতাজা সবুজ গাছ। এ রোগ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়লে উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না বলে ধারণা করছেন আলু চাষিরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অভিমত, টানা শৈত্য প্রবাহের সাথে ঘন কুয়াশার প্রভাবেই এ এলাকার অধিকাংশ আলু ক্ষেতে ওই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, কৃষকরা আলুর ক্ষেতে পাতা মোড়ানো রোগাক্রান্ত আলু ক্ষেতে মেটারিল, মেটাটাফ ও ফোরাম সমম্বিতভাবে স্প্রে করেছেন। ৭ দিন পর স্প্রে করেছেন রিভাস নামের কীটনাশক।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১০ হাজার, ৭০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও অর্জিত লক্ষ্য মাত্রা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে। ওই সব জমিতে বিভিন্ন জাতের আলু চাষ হয়েছে।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে আলুর গাছগুলো সবুজ রং ধারণ করে সজীব হয়ে উঠেছে। ঠিক সেই মুহূর্তে গত কয়েক দিন থেকে ঘন কুয়াশা ও কনকনে তীব্র শীতের সাথে শৈত্য প্রবাহ অব্যাহত থাকায় আলু খেতে পাতার মোড়ক রোগ দেখা দিয়েছে। সে কারণে কালাই পৌরসভাসহ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের অধিকাংশ কৃষক আলু ক্ষেত রক্ষায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তাই কৃষকরা আক্রান্ত ক্ষেতে ছত্রাক নাশক স্প্রে করেও সুফল পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন তারা।
কালাই পৌরসভার আঁওড়া মহল্লার আলু চাষি রবিউল ইসলাম ও রেজাউল ইসলাম, থুপসাড়া মহল্লার মওদুদ আলম, উপজেলার তালোড়া বাইগুনীর বোরহান উদ্দীন, মাত্রাইয়ের সুজাউল ও বাবুল মিয়া, উদয়পুরের জাহাঙ্গীর ও জাকারিয়া জানান, তারা প্রত্যেকে প্রতি বছর ৮ থেকে ১০ বিঘা জমিতে আলু লাগিয়ে থাকেন। কিন্তু আলুর বাড়ন্ত মুহূর্তে বৈরী আবহাওয়ার কারণে মোড়ক রোগে আলুর ফলন নিয়ে শঙ্কিত থাকেন তারা।
তারা আরো জানান, গত বছর বিঘাপ্রতি জমিতে আলু আবাদে ৩০ হাজার টাকা খরচ হলেও এবার সার ও কীটনাশকের দাম বেশি হওয়ায় বিঘাপ্রতি অন্তত ১০ হাজার টাকা খরচ বেড়েছে।
কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুণ চন্দ্র রায় বলেন, ‘ঠাণ্ডা আবহাওয়া আলু চাষের জন্য উপকারী কিন্তু একটানা ঘন কুয়াশা আর শৈত্য প্রবাহ এ ফসলের জন্য ক্ষতিকর।
ঘন কুয়াশা থাকলে আলু ক্ষেত ছত্রাক দ্বারা আক্রান্ত হয়। ঘন কুয়াশা থাকলে আলু ক্ষেত ছত্রাক দ্বারা আক্রান্ত হয়। তাই এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা ও প্রয়োজনীয় পরামর্শসহ লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। আশা করছি এতে ফলনে কোনো প্রভাব পড়বে না।’