লালমনিরহাট : লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনে সন্তান প্রসব করেছেন মনোয়ারা বেগম (২৫) নামের এক নারী। বুধবার (২৯ নভেম্বর) ভোরের দিকে ট্রেনটি টাঙ্গাইল রেলস্টেশন ছাড়ার পর একটি পুত্রসন্তান জন্ম দেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা থেকে লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনযোগে লালমনিরহাট আসছিল মনোয়ারা ও তার স্বামী। টাঙ্গাইল রেলস্টেশন ছাড়ার পর মনোয়ারার প্রসব বেদনা শুরু হয়। গভীর রাতে অনেকেই তখন ঘুমে মগ্ন। মনোয়ারার কান্নার শব্দে ঘুম ভাঙে অনেকের। সেখানে উপস্থিত ছিলেন লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলা মেডিকেল অফিসার ডা. জহির উদ্দিন। তার সহযোগিতায় ফুটফুটে একটি শিশুর জন্ম হয়।
পরে ওই চিকিৎসকের পরামর্শে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া স্টেশনে মা-সন্তানকে নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে পুলিশের সহায়তায় উল্লাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। মা ও শিশু দুজনই সুস্থ থাকায় পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে লালমনিরহাটে নিয়ে আসা হয়।
ট্রেনের জন্ম দেওয়া মনোয়ারা বেগম লালমনিরহাট পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের শহীদ শাহজাহান কলোনি এলাকার বাসিন্দা।
মনোয়ারা বেগমের স্বামী আনারুল ইসলাম বলেন, আমার স্ত্রীর প্রসবের তারিখ ছিল আরও একমাস পরে। সেজন্য স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে আন্তঃনগর লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনযোগে রওনা হই। ট্রেনেই প্রসব বেদনা ওঠে। পরে ট্রেনে থাকা অন্যান্য যাত্রী ও এক চিকিৎসকের সহযোগিতায় আমার সন্তান পৃথিবীর মুখ দেখে। বর্তমানে মা ও শিশু দুজনই সুস্থ আছে।
এ বিষয়ে মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আলট্রাসনোগ্রামসহ নানা পরীক্ষার পর চিকিৎসক সম্ভাব্য প্রসবের তারিখ দেন ২৮ ডিসেম্বর। তাই স্বামীকে নিয়ে লালমনিহাটে বাবার বাড়িতে আসছিলাম। এরপর ট্রেনে বেদনা শুরু হলে আমি একটি পুত্রসন্তান জন্ম দেই। তবে ছেলের নাম এখনো রাখা হয়নি।’
পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকায় কাজ সেরে লালমনিরহাটে যাচ্ছিলাম। পরে ট্রেনের কামরায় একজন মায়ের ডেলিভারির কথা শুনে এগিয়ে যাই। সবার অনুরোধে ওই মায়ের ডেলিভারি করাতে সক্ষম হই। আল্লাহর রহমতে মা ও শিশু দুজনই সুস্থ আছেন।’
লালমনিরহাট রেলওয়ে পুলিশের পরিদর্শক ফেরদৌস আলী বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দায়িত্বরত এসআইকে নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই বগিতে একজন চিকিৎসক ছিলেন। তিনি সন্তান প্রসবে সহযোগিতা করেছেন।