বাল্যবিয়ের দায়ে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মেয়ের বাবা ও গ্রাম্য মাতব্বর। সঙ্গে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক রাহাত মান্নান (মাঝে)
মেহেরপুর : কনেকে ফেলে মাথায় পাগড়ি নিয়ে দৌড়ে পালাল বর ও বরযাত্রীরা। এসময় তাদের জন্য রাতের ভোজনের প্রস্তুতি চলছিল। কিন্তু ভুরিভোজের আগেই হাজির প্রশাসনের লোকজন।
ভুরিভোজ আর বিয়ের মালামাল ফেলেই মাথায় পাগড়ি নিয়ে দৌড়ে পালাল বর ও তার সঙ্গীরা। ভেস্তে গেল বিয়ের সব আয়োজন।
তবে বরযাত্রীরা পালিয়ে রক্ষা পেলেও রক্ষা পাননি কনের বাবা। বাল্যবিয়ে দেয়ার সহযোগিতা করায় গ্যাঁড়াকলে গ্রাম্য মাতব্বাঁ। বাল্যবিয়ের আয়োজনের অপরাধে কনের বাবা মনির হোসেন ও গ্রাম্য মাতব্বর আব্দুল আজিজের ঠাঁই হয় শ্রীঘরে।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাত ১১টার দিকে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার শানঘাট গ্রামে।
সোমবার রাতে শানঘাট গ্রামের মনির হোসেনের মেয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী লাবনী আক্তারের সঙ্গে পাশের জালশুকা গ্রামের দবির উদ্দীনের ছেলে আলামিনের বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল।
খবর পেয়ে গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল আমিন সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাহাত মান্নানকে সেখানে পাঠান। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের আগ মুহূর্তে সেখানে বরযাত্রীদের খাওয়া-দাওয়ার প্রস্তুতি চলছিল।
খাওয়ার পরই বিয়ে পড়ানোর সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান টের পেয়ে বর ও বরযাত্রীরা পালিয়ে যায়। অনুষ্ঠানস্থল থেকে কনের বাবা মনির হোসেন ও গ্রাম্য মাতবর আব্দুল আজিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের জরিমানা ও ২৫ দিনের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়।
এদিকে বর ও বরযাত্রীরা পালিয়ে গিয়ে গতকাল রক্ষা পেলেও তাদের অপরাধ থেকে বাঁচার সুযোগ নেই বলে জানান সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাহাত মান্নান। বাল্যবিয়ে করতে আসার অপরাধে বর ও বরের অভিভাবকদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে মেহেরপুর জেলাকে বাল্যবিয়েমুক্ত ঘোষণা করার প্রস্তুতি চলছে। গত কয়েক মাস ধরে জেলায় চলছে বিভিন্ন কার্যক্রমসহ ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান।
২ ফেব্রুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম