মৌলভীবাজার : হাঁটতে হাঁটতে পথ হারানোর ভয় অবশ্য রয়েছে। তবে একটা মজা আছে। হাঁটতে হাঁটতে দেখা হয়ে যেতে পারে মেছোবাঘের সঙ্গে। এরা মানুষের কোনো ধরনের ক্ষতি করে না। তবে এরা আত্মরক্ষার জন্য যে শব্দ করে তাতে ভয় পেয়ে যেতে পারে যে কেউ।
অনুকূল পরিবেশের কারণেই এ হাওরে যত্রতত্র দেখা মেলে মেছোবাঘের।
এশিয়ার সর্ববৃহৎ হাওর মেছোবাঘের অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে।
সেখানকার বাসিন্দাদের দেয়া তথ্য মতে, এ হাওরে বাঘের আগমন নতুন নয়। প্রতি বছর শুকনো মৌসুমে এখানে মেছোবাঘের উপস্থিতি চোখে পড়ে। দেশে ব্রিটিশ শাসনামলে অর্থাৎ ১৯৪৮ সালের আগে হাকালুকি হাওরের সব এলাকাজুড়ে ছিল হিজল-করচের বন।
তখন সেখানে ছিল বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণী। বাঘ, হরিণ, শুকর, শিয়াল, বেজি এমনকি হাতির আবাস ছিল। হাকালুকি হাওর বনবিভাগের আওতাধীন ছিল, যা পরে জেলা প্রশাসনের খাস তালিকায় চলে যায়।
পাকিস্তান শাসনামলে হাওরের জঙ্গল দিন দিন কমতে থাকে। ১৯৭১ সালের পর সেই বন পুরোটা শেষ হয়ে যায়। তখন সেখানে কোনো বন্যপ্রাণী দেখা যেত না। মাছ কম পাওয়া যেত। পাখি শিকারের প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় দিন দিন কমতে থাকে পাখি।
ছড়ার পাড়ে গাছপালা কমে যাওয়ায় উজানের পলি এসে হাওর ভরাট হতে থাকে। হাওরবাসীর ক্ষেত-খামার অকাল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একপর্যায়ে হাকালুকি হাওরের পরিবেশ ভারসাম্য হারাতে থাকে।
হাকালুকি হাওরের ধ্বংসপ্রাপ্ত হিজল-করচ বন সংরক্ষণের পর সেখানে আজ প্রায় এক হাজার হেক্টর এলাকাজুড়ে গড়ে উঠেছে হিজল-করচের বন। গাছগুলোর উচ্চতা গড়ে ১৫ ফুট। বিগত কয়েক বছর ধরে হাওরের হিজল-করচ বনে শুকনা মৌসুমে শুধু মেছোবাঘ নয়, আশ্রয় নেয় পাতিশিয়াল, সাপ, বেজিসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণী।
৬ ফেব্রুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম