মৌলভীবাজার : টিফিন খাওয়ার সময় এক শিক্ষককে লাথি মারলেন এক শিক্ষিকা। ঘটনাটি ঘটেছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
এ ঘটনায় প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকসমাজে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পতনউষার ইউনিয়নের শ্রীসূর্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ঘটনার খবর পেয়ে উপজেলা ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, নানা অনিয়মের কারণে বিগত এক বছর ধরে শ্রীসূর্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহ-শিক্ষিকা স্থানীয় গৃহবধূ মনোয়ারা বেগমের (৪০) আচরণে সহকর্মীরা অতিষ্ট।
ওই শিক্ষিকার আচরণে অভিভাবকরাও অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে শিক্ষক ও অভিভাবকদের দেয়া অনেক লিখিত অভিযোগ রয়েছে। এর ফলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছিল বলে জানা গেছে।
অভিযুক্ত শিক্ষিকা স্থানীয় প্রভাবশালী পরিবারের গৃহবধূ হওয়ায় উপজেলা শিক্ষা অফিসার (প্রাথমিক) কোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারেননি। উপজেলা শিক্ষা অফিসে অভিযোগ করাকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ননী গোপাল বৈদ্য (৩৫) ও সহকারী শিক্ষিকা মনোয়ারা বেগমের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়।
এর জের ধরে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ক্লাসের একফাঁকে শিক্ষক ননী গোপাল বৈদ্য বিদ্যালয় স্টোর রুমে বসে টিফিন খাওয়ার সময় কেন অভিযোগ করলেন এ বলেই শিক্ষিকা মনোয়ারা বেগম তাকে কয়েক দফা লাথি মারেন। এ ঘটনায় কমলগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমাজে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
খবর পেয়ে বেলা সাড়ে ১২টায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (প্রাথমিক) গকুল চন্দ্র দেবনাথ ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার নাফিউন নুর দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এরপরই মৌলভীবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সিরাজুল ইসলাম ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।
লাঞ্ছিত শিক্ষক ননী গোপাল বৈদ্য বলেন, ‘কেন অভিযোগ করলি, তাহলে এখন লাথি খা’ বলেই কয়েক দফা লাথি মারে।
অভিযুক্ত শিক্ষিকা মনোয়ারা বেগম বলেন, তিনি কাউকে লাঞ্ছিত করেননি। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বিদ্যালয়ের অভিভাবক মাসুক আলী ও এসএমসি সদস্য আজমল আলী বলেন, এভাবে চলতে থাকলে সন্তানদের বিদ্যালয় থেকে নিয়ে অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করাবেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অসমঞ্জু প্রসাদ রায় চৌধুরী বলেন, শিক্ষিকা মনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে প্রচুর অভিযোগ রয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তারা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (প্রাথমিক) গকুল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, তদন্তে সত্যতা পেয়েছেন তিনি। অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৩ মার্চ,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম