নওগাঁ : নওগাঁয় নিয়ামতপুর উপজেলায় ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলিমকে বিয়ে করায় আগের স্বামীর হাতে ফাতেমা (৩৬) নামের এক গৃহবধূ খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ। শুক্রবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার সাবইল গ্রামে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ফাতেমা উপজেলার হাজিনগর ইউনিয়নের নন্দীগ্রামের আইয়ুব আলীর স্ত্রী। ধর্ম বদলের আগে তার নাম ছিল সনেকা।
ওই গৃহবধূর সাবেক স্বামী বিশ্বনাথ কুমার তাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ফাতেমার স্বামী আইয়ুব আলী বাদী হয়ে শনিবার নিয়ামতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। সনেকা ধর্মান্তরিত হয়ে গত দুই বছর আগে আইয়ুব আলীকে বিয়ে করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৫ বছর আগে উপজেলার সাবইল গ্রামের রমনি কুমারের মেয়ে সনেকা রাণীর সঙ্গে একই গ্রামের দয়াল কুমার মণ্ডলের ছেলে বিশ্বনাথ কুমার ওরফে বিশুর বিয়ে হয়। তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে।
২০০৮ সালে একটি হত্যা মামলায় বিশ্বনাথের সাজা হয়। ওই মামলায় আট বছর ৬ মাস কারাভোগের পর গত বছরের অক্টোবর মাসে মুক্তি পান তিনি। বিশ্বনাথ কারাগারে থাকা অবস্থায় তার স্ত্রী সনেকা ধর্মান্তরিত হয়ে নন্দিগ্রামের আইয়ুব আলীকে গত দুই বছর আগে বিয়ে করেন। ধর্মান্তরিত হওয়ার পর তার নাম রাখা হয় ফাতেমা।
গত শুক্রবার সকালে ফাতেমা আগের পক্ষের ছেলে-মেয়ে দেখতে সাবইল গ্রামে তার বড় ভাই হিমান কুমারের বাড়িতে বেড়াতে যান। রাত ৯টার দিকে ফাতেমা বাড়ির বাইরে বের হলে সাবেক স্বামী বিশ্বনাথ কুমার ছুরি দিয়ে তাকে এলোপাতাড়িভাবে কোপাতে থাকেন।
এ সময় ফাতেমার চিৎকারে লোকজন ছুটে এলে বিশ্বনাথ পালিয়ে যান। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় ফাতেমাকে নিয়ামতপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার হলে চিকিৎসরা থাকে মৃত ঘোষণা করেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ লাশ থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় ফাতেমার স্বামী আইয়ুব আলী বাদী হয়ে বিশ্বনাথকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
ফাতেমার ভাই হিমান বলেন, ‘আগের স্বামীকে রেখে অন্য লোককে বিয়ে করায় সনেকার আগের স্বামী বিশ্বনাথ তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এর আগে গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের ঘটনায় এক ব্যক্তিকে হত্যার ঘটনায় বিশ্বনাথের সাজা হয়। প্রায় পাঁচ-ছয় মাস আগে বিশ্বনাথ জেল থেকে বের হয়ে এসেছে।’
নিয়ামতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম খান জানান, ফাতেমাকে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মৃতদেহের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। আসামি পলাতক রয়েছেন। তবে পুলিশ তাকে ধরতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে।
১৮ ফেব্রুয়ারি,২০১৭/এমটিনিউজ২৪/এসএস