শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০২:২২:৫৬

মায়ের কাছে যেতে আকুল আবেদন এক কিশোরীর

মায়ের কাছে যেতে আকুল আবেদন এক কিশোরীর

নওগাঁ : মায়ের কাছে যেতে আকুল আবেদন জানিয়েছন এক কিশোরী। গত ৫৩ দিন ধরে নওগাঁ সদর হাসপাতালে আছে অজ্ঞাত পরিচয়ের এই কিশোরী। আহত কিশোরীকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।

চিকিৎসার পর শারীরিকভাবে সুস্থ হয়ে ওঠেছে সে। তবে এখনো তার মানসিক সমস্যা রয়েছে। ওয়ার্ডের মধ্যে সে সারাক্ষণ ছোটাছুটি করে। মায়ের কাছে যেতে প্রতিদিন কান্না করে। পরিচয় না মেলায় তাকে ছাড়তেও পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মেয়েটিকে নিয়ে এখন তারা বিপাকে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, কিশোরী তার নাম বলছে সুমি। বয়স আনুমানিক ১৬ বছর। বাবা-মায়ের নাম একেক সময় একেক রকম বলছে। বাড়ি বলছে কুষ্টিয়া। আর কিছুই বলতে পারছে না সে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ৫ জানুয়ারি ওই কিশোরীকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রেখে যান ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। এরপর থেকে সে হাসপাতালের মহিলা অর্থো ওয়ার্ডের ৮৯ নম্বর বেডে আছে।

হাসপাতালে আসার পর পাঁচ দিন পর্যন্ত কিশোরী অচেতন ছিল। সবার প্রচেষ্টায় ২০ দিনের মধ্যে সে সুস্থ হয়ে ওঠে। এরপর এক মাসের বেশি সময় কেটে গেছে, তার কোনো অভিভাবক পাওয়া যাচ্ছে না। পাওয়া যাচ্ছে না ঠিকানাও। তাই তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া যাচ্ছে না।

মহিলা অর্থো ওয়ার্ডের ইনচার্জ সেবিকা নেহেরা বানু বলেন, কিশোরী মাথায় আঘাত পেয়েছিল। তার মাথায় ১০-১২টি সেলাই দিতে হয়েছে। তার ডান কানের কিছু অংশ কেটে গিয়েছিল। সেখানেও সেলাই দিতে হয়েছে।

একই ওয়ার্ডের আরেক সেবিকা জাহানারা বেগম বলেন, ওই কিশোরী এখন শারীরিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ। কিন্তু মানসিক সমস্যা থাকায় সে সব সময় ওয়ার্ডের মধ্যে ছোটাছুটি করে। অন্য রোগীদের বিরক্ত করে। মায়ের কাছে যাওয়ার বায়না ধরে প্রায়ই কান্নাকাটি করে।

শিশুটির চিকিৎসক আরশাদ হোসেন বলেন, কিশোরীটি আগে থেকেই মানসিক ভারসাম্যহীন অথবা মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পেয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শারীরিকভাবে সুস্থ হলেও কিশোরীর এখন মানসিক চিকিৎসা দরকার।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আনজুমান আরা বলেন, ‘মেয়েটিকে নিয়ে আমরা বিপদে আছি। আমরা পুলিশ, সমাজসেবা অধিদপ্তর, গণমাধ্যম সবার সঙ্গে যোগাযোগ করছি। কিন্তু তার অভিভাবকদের খোঁজ বা ঠিকানা পাচ্ছি না। তাই তাকে ছাড়তেও পারছি না। কারণ সে হারিয়ে গেলে তার দায়ভার হাসপাতালকে নিতে হবে।’

আনজুমান আরা বলেন, মেয়েটিকে সব সময় নজরে রাখতে হচ্ছে। তার মানসিক চিকিৎসা প্রয়োজন। তারা আরও কিছুদিন অপেক্ষা করবে। এরপরও কিশোরীর অভিভাবক পাওয়া না গেলে তাকে মানসিক চিকিৎসার জন্য পাবনায় পাঠানো হবে। -প্রথম আলো
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে