নাটোর থেকে : গভীর রাতে নাটোর স্টেশনে ট্রেন থামিয়ে সদর হাসপাতালে ফুটফুটে একটি ছেলের জন্ম দেন এক যাত্রী। নবজাতকের নাম রাখা হয়েছে ইসরাফ। মা মোছা. কামরুন্নাহার (৩২) ও ছেলে দু'জনই সুস্থ আছেন।
নাটোর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আশোক চক্রবর্তী জানান, রোববার রাতে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের এক নারী যাত্রীর প্র'সব বে'দনা শুরু হয়। নাটোর স্টেশন স্টপেজ না থাকলেও মানবিক কারণে ও জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ কর্তৃপক্ষের নির্দে'শে নাটোর স্টেশনে ট্রেনটি থামানো হয়।
এরপর জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে পাঠানো অ্যাম্বুলেন্সে করে রাত ২টার দিকে ওই নারীকে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। জাতীয় জরুরি সেবার কর্মকর্তা এডিশনাল ডিআইজি তবারক উল্লাহ জানান, রোববার রাত ১২টা ২০ মিনিটে বাংলাদেশ পুলিশ পরিচালিত জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে একটি ফোন আসে। কলার নিজেকে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসের অ্যাটেনডেন্ট মোহাম্মদ আলী (৩১) বলে পরিচয় দেন।
তিনি জানান, কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনটি কমলাপুর থেকে রাতে ছেড়ে এসেছে, কুড়িগ্রাম যাচ্ছে। ট্রেনে একজন নারী যাত্রী প্রসব বে'দনায় কা'ত'রাচ্ছেন এবং তার র'ক্তপা'ত হচ্ছে। তিনি ইতোমধ্যে ট্রেনে কোনো ডাক্তার যাত্রী আছেন কিনা খোঁ'জ নিয়েছেন। কিন্তু ট্রেনে কোনো ডাক্তার যাত্রী ছিল না। ট্রেনটি বর্তমানে পাবনা বাইপাস অ'তিক্র'ম করছে। ট্রেনটির পরবর্তী স্টেশন বগুড়ার সান্তাহার পৌঁছতে আরও দুই-আড়াই ঘণ্টা সময় লাগবে। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে। কিন্তু ধা'রে কাছে কোনো হাসপাতাল নেই। কিছুক্ষণের মধ্যে ট্রেনটি নাটোর স্টেশন অতি'ক্রম করবে।
ট্রেনটি যদিও নাটোর স্টেশনে থামার কথা নয়, তবুও অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা হলে তারা রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে ট্রেনটি নাটোর স্টেশনে থামাবে। ৯৯৯ নম্বর থেকে তাৎ'ক্ষণিক নাটোর সদর হাসপাতালে যোগাযোগ করে রেলস্টে'শনে অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। রাত পৌনে ২টায় ট্রেনটি নাটোর স্টেশনে থামে এবং প্রসূতিকে দ্রুত নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
প্রসূতির স্বামী নাছির মোল্লা জানান, রোববার রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে নওগাঁর উদ্দেশে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনে তিনি তার স্ত্রী কামরুন্নাহারকে নিয়ে ঢাকার কমলাপুর থেকে যাত্রা করেন। পথে স্ত্রীর প্র'সব বে'দনা এবং র'ক্তপা'ত শুরু হয়। ওই মহিলাকে হাসপাতালে পাঠায় ট্রেনটির পরিচালক ও জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ কর্তৃপক্ষ। সোমবার রাত ২টা ৩০ মিনিটে নাটোর সদর হাসপাতালে তার স্ত্রী একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। নাছির মোল্লা তার স্ত্রী ও সন্তানের সং'ক'টময় মু'হূর্তে সহা'য়তা করার জন্য ৯৯৯ ও রেল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।