বিয়ের আশ্বাসে কলেজছাত্রীর সঙ্গে দীর্ঘদিন প্রেম ও ভাড়া বাসায় নিয়ে তিন মাস সংসার করেন সাইফুল ইসলাম। এখন বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় ওই ছাত্রী প্রেমিকের বাড়িতে এসে অনশন করছেন।নাটোর নলডাঙ্গা উপজেলার পিপরুল ইউনিয়নের ঠাকুর লক্ষ্মীকোল গ্রামে বৃহস্পতিবার থেকে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেন ওই ছাত্রী। আজ রোববারও তা অব্যাহত আছে।
এদিকে প্রেমিকার আসার খবর শুনে বাড়ি থেকে উধাও হয়েছেন প্রেমিক সাইফুল। সাইফুল ঠাকুর লক্ষ্মীকোল পাবনাপাড়া গ্রামের সিদ্দিক মোল্লার ছেলে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার একই ইউনিয়নের সোনার মোড়ের ওই কলেজছাত্রীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রেম চালিয়ে আসছিলেন পাবনাপাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলাম।
দুই বছর ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক। গত বছরের আগস্ট মাসে পপিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গাজীপুরের কামরাঙ্গার চালা এলাকায় ভাড়া বাসায় নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে সংসার শুরু করেন। কিন্তু বেশ কিছু দিন ধরে মেয়েটি তার প্রেমিক সাইফুলকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু তিনি তাতে অস্বীকৃতি জানান।
পরে মেয়েটি বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকলে গত বছরের নভেম্বর মাসে দুজন নাটোর ফিরে আসেন। একপর্যায়ে গত ৭ জানুয়ারি রাতে ওই প্রেমিকাকে সাইফুল তার বাড়িতে আসার জন্য বলেন। তার কথামতো বাড়িতে গেলে সাইফুলের অভিভাবকরা মেয়েটিকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। কিন্তু মেয়েটি বিয়ের দাবিতে অনড় থাকেন।
স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বার তাদের বিয়ের আশ্বাস দেন। তবে তিন দিন পরও বিয়ের বিষয়ে কোনো সুরাহা হয়নি।
এ ছাড়া শুক্রবার এ নিয়ে এক গ্রাম্য বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও এখনও হয়নি। বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়ায় আজ রোববারও ওই কলেজছাত্রী তার প্রেমিকের বাড়িতে গিয়ে অনশন শুরু করেন।
ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, মেয়েটি তার প্রেমিকের বাসার ভেতরে বসে আছেন। বাড়ির লোকজন থাকলেও প্রেমিক সাইফুল পালিয়েছেন।
অনশনরত ওই কলেজছাত্রী বলেন, প্রায় দুই বছর আগে প্রতিবেশী সাইফুলের সঙ্গে পরিচয় ও পরে সম্পর্ক হয়। এর পর বিয়ের আশ্বাসে সাইফুল তার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কও গড়ে তোলেন। গাজীপুরে তিন মাস সংসারও করেন তারা। কিন্তু সম্প্রতি তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিলে তিনি তাতে অস্বীকৃতি জানান।
সাইফুল যতক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীর মর্যাদা না দেবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত ওই বাড়িতেই অবস্থান করবেন বলে জানান ওই ছাত্রী। এ ব্যাপারে প্রেমিক সাইফুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। প্রেমিকের বাবা সিদ্দিক মোল্লা বলেন, দরকার হলে ২০ লাখ টাকা খরচ করব। তবু এ মেয়েকে ছেলের বউ হিসেবে মানব না।
অনশনরত পপি বলেন, আমাকে স্বীকৃতি না দিলে এখান থেকে লাশ যাবে। তবু বাড়ি থেকে যাব না। নলডাঙ্গা থানার ওসি বলেন, বিষয়টি শুনেছি। অভিযোগ দিতে বলেছি। সমাধানের চেষ্টা করা হবে।