এটি কোন গল্প নয়, বাস্তব একটি ঘটনা। এক মধ্যবৃত্ত পরিবারে জন্ম নেওয়া এক ছেলের প্রশংসানীয় উদ্যোগের কথা। যার নাম মো. রুহুল আমীন রুবেল, যিনি একজন মানবিক মানুষ হিসেবে এলাকায় সুপরিচিত। তার বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামে।
তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা নন বা জনপ্রতিনিধিও নন। তিনি একজন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। অথচ মানবিক মূল্যবোধ, সামাজিক আর ভালো কাজের মাধ্যমে হয়ে উঠেছেন একজন মানবিক মানুষ। গরীব দুঃখীদের মুখে হাসি ফোটানোই যার স্বপ্ন। শৈশবকালে তিনি দেখেছিলেন স্বপ্ন, যৌবনকালে এসে করছেন তার বাস্তবায়ন।
গত ১৪ বছরে অসহায় হতদরিদ্র পরিবারের অন্তত ৬১ জন মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন তিনি নিজে। ধনী কিংবা মধ্যবিত্ত পরিবারের মতো আর পাঁচটা মেয়ের যেভাবে ধুমধামে বিয়ে হয়, ঠিক সেইভাবে নিজ খরচে এসব অসহায় মেয়েদের বিয়ে দিয়ে থাকেন রুহুল আমিন।
শুধু বিয়ে দিয়েই তার দায়িত্ব শেষ নয়। বিয়ের পর ওইসব মেয়ে ও জামাইদের নিজের সাধ্যমত সমাদর করে থাকেন তিনি। এছাড়া প্রতি শুক্রবার গরীব অসহায়দের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের খাবার, পোশাক, নগদ অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেন। তাইতো একমুঠো খাবারের আশায় শুক্রবারের জন্য অপেক্ষায় থাকেন এলাকার গরীব অসহায় মানুষেরা। সেই খাবার হাসি মুখে তুলে দেন তিনি। এমনকি গরীব ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার খরচ যোগান দেওয়াসহ বিভিন্নভাবে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ান তিনি। তাইতো এলাকায় একজন মানবিক মানুষ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন তিনি।
আর্থিকভাবে ততোটা সচ্ছল নন রুহুল আমিন। বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তি আর নিজের গড়ে তোলা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আয় দিয়ে সংসার চালান। পাশাপাশি এমন জনহিতকর কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। বর্তমানে তিনি তার এলাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিএম মোবাইল হাউস, বিএম লেডিস কর্নার পরিচালনা করছেন।
আর্থিকভাবে সচ্ছল না হয়েও দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে গরীব অসহায় মানুষদের সেবা করে যাচ্ছেন নিয়মিত। গরীব অসহায় মানুষদের মুখে হাসি দেখলেই যেন তার ভাল লাগে। কেননা নিজের যতোটুকু আছে সেই সামান্য কিছু থেকেই গরীব অসহায়দের মুখে হাসি ফোটান তিনি। এজন্য তাকে অনেকেই গরীবের বন্ধু বলে ডাকেন।
স্থানীয়রা জানান, বিভিন্ন জেলায় নিজের পরিচিত মানুষদের সমন্বয়ে গরীব অসহায় পরিবারের মেয়েদের খুঁজে বের করেন। এরপর তিনি তার নিজ খরচে বিয়ে দিয়ে থাকেন। এছাড়া নিজের সাধ্য অনুযায়ী যতটুকু সম্ভব ততটুকু তিনি গরীব অসহায় মানুষদের মধ্যে বিলিয়ে দেন। এ পর্যন্ত তিনি নিজ খরচে ৬১ জন অসহায় দরিদ্র মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন।