রবিবার, ১৭ জুলাই, ২০১৬, ০৩:০৪:১৭

নাটোরে নিখোঁজ ২৮ তরুণ

নাটোরে নিখোঁজ ২৮ তরুণ

সাজ্জাদুল হক : নাটোরে গত ছয় মাসে ২৪ জনসহ ২৮ তরুণ নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, যাদের অধিকাংশের বয়স ১৫ থেকে ২১ বছর।

পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার মুখার্জী বলছেন, শনিবার পর্যন্ত নাটোর জেলায় ৪৪ তরুণ নিখোঁজ হওয়ার তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তাদের মধ্যে ২৮ জনের সন্ধান চেয়ে জিডি করেছেন স্বজনরা। “জিডি হওয়া তরুণদের মধ্যে ২৪ জন চলতি বছর এবং ৪ জন গত বছরে নিখোঁজ হন। এছাড়া জেলায় আরও অন্তত ১৬ তরুণ নিখোঁজ রয়েছেন বলে গোয়েন্দা পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।”

পুলিশ সুপার জানান, নিখোঁজ তরুণদের অধিকাংশের বয়স ১৫ থেকে ২১ বছরের মধ্যে। তাদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে।

নিখোঁজ তরুণদের মধ্যে একজন লালপুর উপজেলার নুরুল্লাপুর গ্রামের আশিকুর রহমান ওরফে অপু (১৯)। তার বাবা রবিউল ইসলাম একজন দর্জি। রবিউল বলেন, তার দ্বিতীয় ছেলে অপু কাউকে কিছু না বলে ১ জুন বিকেলে বাড়ি থেকে চলে যান। “আমরা মনে করেছিলাম, অপু ঈদে ফিরে আসবে। ফিরে না আসায় ঈদের আগের দিন ৬ জুলাই লালপুর থানায় জিডি করি।”

অপু লালপুরের মহরকয়া ভকেশনাল স্কুলে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। এর আগে চতুর্থ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন নিজ গ্রামের দাখিল মাদ্রাসায়। তারও আগে সে ঢাকার আশুলিয়ার একটি মাদ্রাসায় হাফেজিয়া পড়ে। তবে পড়া শেষ না করেই বাড়ি চলে আসে। অপু নিয়মিত নামাজ-রোজা করতেন এবং স্বল্প সময়ের জন্য দুইবার তাবলীগেও যান বলে জানান তার বাবা।

তিনি বলেন, গ্রামের মামুন নামে এক তরুণের সঙ্গে অপুর বন্ধুত্ব ছিল। মামুনের পরিবারের সবাই জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। নিখোঁজের পর মামুনও অপুর সন্ধান দিতে পারেনি। বাবা বলেন, “অপু একটু রাগী মেজাজের ছিল। মুঠোফোনে অনেক রাত জেগে কথা বলত। জিজ্ঞেস করলে বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলার কথা জানাত”।

‘অপুইউ’ নামে তার একটি ফেসবুক আইডি ছিল বলে তিনি জানান। সেখানে তার ছবির সঙ্গে ‘ছাত্রশিবির’ লেখা ছিল। অপু জানিয়েছিল তার বন্ধুরা এটা করেছে। নিখোঁজের পর ফেসবুক বন্ধুদের কারও কারও সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, বয়সে তারা অপুর চেয়ে বড়। তাদের অবস্থানও অনেক দূরে।

অপুর মা আজিজা সুলতানা বলেন, চলে যাওয়ার দুই দিন আগে অপু তার মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলেন। সেটা মেরামত করে কিছু নম্বর নিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কেউ অপুর সন্ধান দিতে পারেনি। অপু মাঝেমধ্যে রাজমিস্ত্রির সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন বলে জানান আজিজা। কিছুদিন থেকে সে ধূমপান করত। নিষেধ করলে রেগে যেত।

লালপুর থানার ওসি আব্দুল হাই তালুকদার অপু নিখোঁজের ব্যাপারে জিডি হয়েছে জানিয়ে বলেন, অপুর ছবি ও তথ্য বিভিন্ন সংস্থায় পাঠানো হয়েছে।

অপু তিন ভাইবোনের মধ্যে দ্বিতীয়। তার বড় ভাই ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। বিডি নিউজ
১৭ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে