শুক্রবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৭, ১০:০১:৪১

৮ বাড়ি আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত, পুলিশের গুলিতে নিহত ১

৮ বাড়ি আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত, পুলিশের গুলিতে নিহত ১

রংপুর থেকে : ফেসবুকে এক স্ট্যাটাস পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে শুক্রবার রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার হরকলি ঠাকুরপাড়া গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের আটটি বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কোতোয়ালি, গঙ্গাচড়া ও তারাগঞ্জ থানার পুলিশ গিয়ে শটগানের গুলি ও টিয়ার গ্যাসের শেল ছোড়ে। এ সময় সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন সাত পুলিশসহ ২৫ জন।

রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল-এ) সাইফুর রহমান বলেন, ওই ঘটনায় হাবিবুর রহমান (৩০) নামের এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। লাশ রংপুর মেডিকেল কলেজের মর্গে রয়েছে। আহতদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ১১ জন।

পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, গঙ্গাচড়া উপজেলার খলেয়া ইউনিয়নের ঠাকুরপাড়া এলাকার মৃত খগেন রায়ের ছেলে টিটু রায় ৫ নভেম্বর ফেসবুকে ‘ধর্মীয় অবমাননাকর’ স্ট্যাটাস দেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিন থেকে ওই গ্রাম ও আশপাশ এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

গঙ্গাচড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিন্নাত আলী বলেন, এ ঘটনায় গঙ্গাচড়া উপজেলার খলেয়া ইউনিয়নের লালচান্দপুর গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে টিটু রায়কে আসামি ৫ নভেম্বর গঙ্গাচড়া থানায় মামলা করেন। টিটু রায় গ্রামে তিনি থাকেন না। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করেন।

ওসি আরও জানান, আজ বিকাল তিনটার দিকে হঠাৎ করে উপজেলার শলেয়া শাহ, বালাপাড়াসহ আরও কয়েকটি এলাকার কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী সমবেত হয়ে বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভকারীরা হরকলি ঠাকুরপাড়ায় অবস্থিত অভিযুক্ত টিটু রায়ের বাড়িতে আগুন দেয়। এতে তাদের তিনটি ঘর ভস্মীভূত হয়ে যায়। এরপর ওই এলাকার আরও সাতটি বাড়ির ১৫টি ঘরে আগুন দিলে সেগুলো ভস্মীভূত হয়ে যায়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, টিটু রায়ের তিনটি ঘর ছাড়াও সুধীর রায়ের ছয়টি ঘর, অমূল্য রায়ের দুটি ঘর, বিধান রায়ের দুটি ঘর, কৌশল্ল রায়ের দুটি, কুলীন রায়ের একটি, ক্ষীরোদ রায়ের একটি, দীনেশ রায়ের একটি ঘর ভস্মীভূত হয়েছে।

টিটু রায়ের ঘরে সামনে আহাজারি করতে করতে তার মা জিতেন বালা বলেন, ‘আমরা কিছুই জানি না। কেন আমাদের বাড়িঘরে আগুন দেওয়া হলো। এখন আমি কেমন করিয়া বাস করব।’

এদিকে কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল ইসলাম ও গঙ্গাচড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিন্নাত আলী বলেন, সদর, গঙ্গাচড়া ও তারাগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা হলো ঘটনাস্থল হরকলি ঠাকুরপাড়া। ঘটনা জানার পর পর তিন থানা থেকে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। উত্তেজিত জনগণকে শান্ত ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শটগানের গুলি ও টিয়ার গ্যাসের শেল ছোড়ে। এতে সাত পুলিশসহ ২০ জন আহত হয়েছে।
এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে