শুক্রবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৭:১৪:২৮

‘জীবনের কাছে হেরে গেলাম মা

‘জীবনের কাছে হেরে গেলাম মা

সিরাজগঞ্জ : ৪০ দিন বয়সে শিশুকন্যাকে রেখে পরকীয়ার টানে বাবার বাড়ি চলে যান স্ত্রী আনোয়ারা পারভীন রুমী।  স্ত্রীকে ফিরে পেতে মামলাও করেন রেজা, যা এখনো চলমান।  

রুমী ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দেয়ায় স্বামী রেজা মুষড়ে যান।  অবশেষে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।

ঘটনাটি ঘটেছে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার শহীদগঞ্জ দাক্ষিণপাড়ায়।  মেয়েকে হত্যা করে মুদি দোকানি সেলিম রেজা (৩৮) গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন।

স্ত্রী তালাক দেয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে এ কাজ করেন তিনি বলে পুলিশকে জানিয়েছে এলাকাবাসী।  নিহত শিশু সোহা মনি (৭) স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিশু শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

বৃহস্পতিবার রাতের কোনো এক সময় মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটে।  শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে লাশ দুটি উদ্ধার করে পুলিশ।

জানা গেছে, পৌর এলাকার দাক্ষিণপাড়ার মৃত আবদুল মজিদ সেখের ছেলে সেলিম রেজার সঙ্গে ৯ বছর আগে শাহজাদপুরের হাজী আলী আজমের মেয়ে রুমীর বিয়ে হয়।

দু’বছর পরে তাদের কোলজুড়ে আসে কন্যা সোহা মনি।  ৪০ দিন বয়সে ওই শিশুকন্যাকে রেখে পরকীয়ার টানে বাবার বাড়ি চলে যান রুমী। রেজা তার স্ত্রীকে ফিরে পেতে মামলাও করেন যা এখনো চলমান রয়েছে।

চলতি বছরের ২৮ জুলাই রুমী ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দিলে স্বামী রেজা মুষড়ে পড়েন।

রেজার মা সেতারা বেগম বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে সেলিম আমাকে ব্যথার ওষুধের কথা বলে কোকাকোলায় ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ায়। পরে তার শিশুকন্যা সোহাকেও খাওয়ায়।

তিনি জানান, কিছুক্ষণ পর আমি ঘুমিয়ে পড়লে সেলিম সোহার মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করলে জেগে ওঠে এ ঘটনা দেখতে পান।

সেতারা বেগম বলেন, পরে তিনি ঘুমের ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় আবারো ঘুমিয়ে পড়েন।  সকাল ৯টার দিকে ঘুম থেকে জেগে ওই ঘরের আড়ার সঙ্গে ছেলেকে গলায় নাইলনের দড়ি প্যাঁচানো অবস্থায় ঝুলে থাকতে দেখে চিৎকার করেন।

এসময় নিহতের ছোট ভাই মাহমুদুল আলম পাশের ঘর থেকে এসে দড়ি কেটে লাশ নিচে নামান এবং মেয়ে সোহা মনিকে পাশের ঘর থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন।

আত্মহত্যার আগে রেজা তার ব্যক্তিগত ডায়েরিতে লিখে যান- 'জীবনের কাছে হেরে গেলাম মা। তোমাকে তো আর নিয়ে যেতে পারলাম না, তাই সোহা মনিকে নিয়ে গেলাম।'

সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, ধারণা করা হচ্ছে- স্ত্রী ডিভোর্স দেয়ায় হতাশাগ্রস্ত ছিলেন রেজা।  এ কারণে তিনি কোমল পানীয়র সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে মেয়েকে হত্যা করেন।

শুক্রবার দুপুরে বাবা-মেয়ের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
৩০ সেপ্টেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে