এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : সিলেটে প্রকাশ্যে এক নারীকে নিয়ে ঘটেছে অদ্ভুত কাণ্ড। দুই ব্যক্তি ওই নারীকে স্ত্রী দাবি করে টানাটানি করেন। এমনকি ওই দুজনের মাঝে মারামারিও হয়। শেষপর্যন্ত ঘটনাটি পুলিশে গড়ায়।
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেল ৫টায় নগরের লামাবাজারের আয়েশা মেডিকেয়ার জেনারেল হাসপাতালের সামনে ঘটে এই ঘটনা। দুই ব্যক্তিরই দাবি, আইরিন সুলতানা (৩৫) নামে ওই নারী তাদের বৈধ স্ত্রী। বিষয়টি জটিল হওয়ায় স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেন। আর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শাহপরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিসুর রহমান।
তিনি জানান, ২০০৪ সালের ২৯ নভেম্বর মো. খোকন মিয়ার (৪৫) সঙ্গে বিয়ে হয় আইরিন সুলতানার। খোকন মিয়া চাঁদপুরের শাহারাস্তি থানার বাদিয়া গ্রামের রুস্তম আলীর ছেলে। আর আইরিন সুলতানা কুমিল্লার দেবীদ্বার থানার শাহজাহান মিয়ার মেয়ে।
বিয়ের পর তাদের ঘরে চার সন্তান জন্ম হয়। বর্তমানে বড় ছেলের বয়স ১৭, ছোট ছেলের চার। আর দুই মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ের বয়স ১৩ ও মেঝো মেয়ের সাত বছর।
ওসি আরও জানান, ২০১৮ সালের তাদের সংসারে অশান্তি দেখা দিলে স্বামী খোকনের বিরুদ্ধে যৌতুক ও নারী নির্যাতনের মামলা করেন আইরিন। এরপর থেকে তারা দুজন আলাদা থাকছেন। এর মধ্যে দুই ছেলে স্বামীর কাছে ও দুই মেয়ে স্ত্রীর কাছে থাকছে।
এদিকে কুমিল্লার কবির হোসেন (৩৬) নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে আইরিনের। এরপর প্রেমিকাকে বিয়ে করতে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সৌদি থেকে বাংলাদেশে আসেন কবির। এর এক মাস পর ৭ অক্টোবর আইরিনকে ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে এক কাজী অফিসে নিয়ে বিয়ে করেন কবির। এরপর ঢাকায় ইউনিক হাসপাতালে নার্সের চাকরি শুরু করেন আইরিন। ফলে তিনি দুই মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় থাকতেন। অন্যদিকে কবির থাকতেন দাউদকান্দিতে। মাঝেমধ্যে ঢাকায় এসে আইরিনের সঙ্গে থাকতেন কবির।
শাহপরাণ থানার ওসি আরও বলেন, চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি কবির ও আইরিন দুজন সিলেটে গিয়ে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। আর দক্ষিণ সুরমার একটি রেস্টুরেন্টে বাবুর্চির কাজ নেন কবির। অন্যদিকে আইরিন আয়েশা মেডিকেয়ার জেনারেল হাসপাতালে সিনিয়র নার্স হিসেবে চাকরি নেন।
এই সংবাদ আবার জানতে পারেন আইরিন সুলতানার প্রথম স্বামী খোকন। এরপর তিনি বুধবার বিকেলে আয়েশা মেডিকেয়ার জেনারেল হাসপাতালের সামনে যান। সেখানে পেয়ে যান আইরিনকে। তখন আইরিনের সঙ্গে কবিরও ছিলেন। এরপর খোকন তার ভগ্নীপতি ওয়াহিদকে নিয়ে কবিরকে মারধর করেন। সেখানে দুই পক্ষরই মারামারি হয়।
একপর্যায়ে আইরিন ও কবিরকে ধরে শাহজালাল উপশহরের তেররতনে নিয়ে যান খোকন। এরপর খোকন তাদের নিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের ২২, ২৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রেবেকা আক্তার লাকীর কাছে যান। লাকি এই কথা শুনে তাদের শাহপরাণ থানা পুলিশের হাতে তুলে দেন।
কাউন্সিলর বলেন, বিষয়টি খুবই জটিল। দুই স্বামীর দাবি, তারা নাকি আইরিনকে বিয়ে করেছেন এবং এর প্রমাণ রয়েছে। তাই তিনজনকেই আমি পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি।
শাহপরাণ থানার ওসি সৈয়দ আনিসুর রহমান জানান, তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর ঘটনাস্থলটি লামাবাজার কোতোয়ালি থানায় হওয়ায় পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য তাদের কোতোয়ালি থানায় পাঠানো হয়েছে।