জাকির হোসেন, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে বৃদ্ধা মাকে মারধর করে গুরুতর আহত অবস্থায় বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে ৩ পাষণ্ড ছেলে। বাড়ি থেকে বের হয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে একাধিকবার গেলেও কেউ কোনো সমাধান দেয়নি। অবশেষে কোনো পথ না পেয়ে বালিয়াডাঙ্গী বাজারে গত ১০ দিন ধরে বিভিন্ন দোকান থেকে সহযোগিতা তুলে জীবনযাপন শুরু করেছেন ৯০ বছরের বৃদ্ধ মা। টাকার অভাবে ছেলেদের মারধরের শিকার হয়ে চিকিৎসাও করাতে পারেননি তিনি।
শুক্রবার (১৭ মে) জুম্মার নামাজের পর উপজেলা পরিষদ মার্কেটের নিচতলায় একটি দোকানে কেঁদে কেঁদে এমন কথা জানাচ্ছিলেন সালেহা বেগম (৯০) নামে ওই মা। তিনি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার পাড়িয়া ইউনিয়নের পাঁচ দোয়াল গ্রামের মৃত হাফিজ উদ্দীনের স্ত্রী।
প্রতিবেদক বৃদ্ধ মায়ের কাছে ঘটনার বিষয় জানতে চাইলে তিনি কান্নাস্বরে জানান, বিয়ের পর ৩ ছেলের জন্ম হওয়ার কয়েক বছর পরই মারা যায় তার স্বামী। স্বামীর শেষ সম্পত্তিটুকু আগলে অনেক কষ্টে বড় ছেলে খলিলুর রহমান, মেজো ছেলে আব্দুল ও ছোট ছেলে খাজিজুল রহমানকে লালন-পালন করেন তিনি। বড় হয়ে তিন ছেলেকে বিয়েও দিয়েছেন তিনি। কিন্তু বিয়ের পর কোনো ছেলেই তার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিতে রাজি হয়নি। গত ১ মাস হলো স্বামীর শেষ সম্বলটুকুও জোর করে টিপ সই দিয়ে লিখে নিয়েছে ছোট ছেলে খাজিজুল।
তিনি বলেন, আমার ৩ ছেলে প্রতিবেশী কয়েকজনের পরামর্শে জমি লিখে নেয় আমাকে নতুন করে দেখাশোনা করবে এমন শর্তে। কিন্তু জমি লিখে দেওয়ার পর আমার খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। আমি বাড়ি থেকে বের হতে না চাইলে মারধর করে মুখ ফাটিয়ে দেয় আমার ছোট ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১০ দিন ধরে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পরিষদ চত্বরের বিভিন্ন অফিসের বারান্দাসহ উপজেলা পরিষদের ২য় গেটে রাত্রিযাপন করছেন ওই বৃদ্ধা মা।
থানা পুলিশের আশ্রয় গ্রহণ করেনি কেন? বৃদ্ধা মাকে এমন কথা জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, এক পুলিশকে বলেছি। তিনি ঈদের পর আমার বাড়িতে গিয়ে আমার ছেলেদের সাথে কথা বলার সম্মতি জানিয়েছেন। বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি মোসাব্বেরুল হক জানান, আমি ছুটিতে রয়েছি। ওই ছেলেদের ঠিকানা ব্যবস্থা করে থানায় দিয়েন। খুব দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সূত্র: আমাদেরসময়.কম