আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রায় দু’বছর ধরে চলা প্রেমের বিয়ের সন্ধিক্ষণে স্কুলশিক্ষিকা। এর মধ্যে জ্যোতিষীর নির্দেশ, এই পাত্রীকে বিয়ে করলে পাত্রের মৃত্যু অবধারিত। এরপরই শুরু হয় টানাপোড়েন।
অবশেষে মানসিক অবসাদ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করলেন স্কুলশিক্ষিকা পাত্রী। বৃহস্পতিবার এমন ঘটনাই ঘটেছে ভারতের হলদিয়া শিল্পাঞ্চল এলাকায়।
মৃত শিক্ষিকার নাম মৌমিতা শ্যামল (২৬)। এ ঘটনায় শিক্ষিকার পরিবারের পক্ষ থেকে হলদিয়া থানায় অভিযুক্ত পাত্রের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে। পুলিশ পাত্রের সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে কলকাতা২৪-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হলদিয়ার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের একটি সরকারি আবাসনের বাসিন্দা মৌমিতা তমলুকের রাধামনি এলাকার একটি স্কুলের ভূগোল বিষয়ের শিক্ষিকা।
মৌমিতা দেবীর পরিবার সূত্রের দাবি, বছর দুয়েক আগে মহিষাদল থানার ভাঙ্গাগড়া গ্রামের বাসিন্দা অভিজিৎ মণ্ডল নামের এক যুবকের সঙ্গে মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
অভিজিৎবাবু হলদিয়ার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কর্মী। কর্মসূত্রে অভিজিৎবাবু সপরিবারে হলদিয়ার টাউনশিপে তার সংস্থার আবাসনে থাকেন। এ দু’জনের মেলামেশার বিষয়টি দুই পরিবার মেনে নেয়। এরপর দু’জনের মধ্যে বিয়ে পাকা হয়ে যায়।
বিয়ের দিনক্ষণ স্থির হওয়ার কিছুদিন বাদেই পাত্রের পরিবারের পক্ষ থেকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সদর তমলুকের এক জ্যোতিষের কাছে পাত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয়।
যেখানে মেয়েটির ভাগ্যে দোষ রয়েছে বলে জানানো হয়। মেয়েটিকে বিয়ে করলে ছেলেটির খুব শিগগিরই মৃত্যু হবে বলে ওই জ্যোতিষী বয়ান দেন।
এরপরই ছেলেটি বিয়ের সম্বন্ধ ভেঙে দিতে উদ্যত হয়। অগত্যা মেয়েটির পরিবারের তরফে পুনরায় হলদিয়ার আর এক জ্যোতিষের কাছে পাত্র ও পাত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয়।
যেখানে মেয়েটির কোনো দোষ নেই বলে হলদিয়ার জ্যোতিষী বয়ান দেন। এরপরই ছেলেটিকে অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে বিয়েতে পুনরায় রাজি করানো হয়। এ বছরের নভেম্বরে দু’জনের বিয়ে হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।
তবে ছেলেটি সম্প্রতি মেয়েটির সঙ্গে প্রায়শই খারাপ ব্যবহার করছিল বলে অভিযোগ। বিয়ে ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কায় মেয়েটি ক্রমে মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করে।
এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে সরকারি আবাসনের বাথরুমে ঢুকে গলায় দড়ি দিয়ে মেয়েটি আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তাকে অচেতন অবস্থায় হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মেয়েটিকে মৃত বলে জানান।
এরপরই মেয়েটির পরিবারের তরফে হলদিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ জানান হয়েছে। হলদিয়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনার পর থেকেই ছেলেটি গা ঢাকা দিয়েছে। তার সন্ধানে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে।
৩০ সেপ্টেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম