আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কলেজে ক্লাস করতে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি লালগড়ের বৈতা গ্রামের লক্ষ্মী আচার্য ওরফে পূজা। ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজের কলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী পূজা নিখোঁজ রয়েছেন চার মাসের উপর। আঠারো ছুঁই ছঁই এই তরুণীর কোনও সন্ধান পাচ্ছে না পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশের একাংশের ধারণা, অপরাধচক্রের লোকজন পূজাকে অপহরণ করে কোথাও আটকে রেখেছে। অপহরণ-কাণ্ডে কলকাতার এক গাড়ি চালকের নাম পেয়েছে পুলিশ। কিন্তু অভিযুক্ত যুবকের খোঁজ মেলেনি। চরম উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছে পূজার পরিবার। পুলিশ অবশ্য হাল ছাড়েনি। কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
লালগড়ের বৈতা গ্রামের পূজা এ বছরই ঝাড়গ্রামের সেবায়তনের একটি স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ হন। ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজে কলা বিভাগে প্রথম বর্ষে ভর্তি হন তিনি। পূজার বাবা অনেক আগে প্রয়াত হয়েছেন। বাড়িতে মা ও দাদার সঙ্গে থাকতেন তিনি। দাদাও কলেজ পড়ুয়া। পরিবার সূত্রের দাবি, ভর্তি হওয়ার পরে বৈতা থেকে বাসে ঝাড়গ্রামের কলেজে মাত্র দু’দিন গিয়েছিলেন পূজা। গত ১৮ জুলাই তৃতীয় দিন কলেজে যান তিনি। কিন্তু কলেজ থেকে আর বাড়ি ফেরেননি। তাঁর মোবাইল ফোনও সুইচড অফ ছিল। ওই দিনই লালগড় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন পূজার কাকা অরুণ আচার্য। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। পার্শ্ববর্তী জেলা ও কলকাতা পুলিশকে সতর্ক করে দেওয়া হয়। পূজার মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে কলকাতা পুলিশ জানতে পারে, ১৮ জুলাই দুপুরে মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ছিল পাঁশকুড়া ও মেচেদা রেল স্টেশন এলাকা। ওই রাতে মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন পাওয়া যায় কলকাতার রুবি হাসপাতাল সংলগ্ন আনন্দপুর রেল কলোনি।
তদন্তে আনন্দপুরের বাসিন্দা পেশায় ভাড়ার গাড়ির চালক অতনু দাস নামে এক যুবকের নাম পাওয়া যায়। জানা যায়, কয়েক মাস আগে বৈতায় একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন অতনু। ওই বিয়েবাড়িতে পূজাও গিয়েছিলেন। তদন্তের সূত্র ধরে কলকাতায় যে বাড়িতে অতনু ভাড়া থাকেন সেখানেও হানা দিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু তার আগেই অতনু বেপাত্তা হয়ে যান। পূজার বয়স এখনও আঠারো হয়নি। ফলে, অপহরণের ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। অসুস্থ হয়ে পড়েছেন পূজার মা বর্ণালীদেবী।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “মেয়েটিকে উদ্ধার করার জন্য সব রকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আশা করছি শীঘ্রই তদন্তের জাল গুটিয়ে ফেলে মেয়েটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হবে।”-আনন্দবাজার
২২ অক্টোবর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস