বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৬, ০২:০১:৪১

গভীর সংকটে পশ্চিমবঙ্গের কৃষি, দুর্ভিক্ষের শঙ্কা

গভীর সংকটে পশ্চিমবঙ্গের কৃষি, দুর্ভিক্ষের শঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে ভারতে কৃষিতে গভীর সংকট দেখা দিয়েছে। প্রায় ৮০ শতাংশ আমন ধান কাটা হয়নি। রোপণ করা যাচ্ছে না রবিশস্য ও আলুর বীজ। পচতে শুরু করেছে আলুর বীজ। শীতকালীন সবজি চাষও শুরু হতে পারছে না।

আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে নগদ টাকার জোগান স্বাভাবিক না হলে পশ্চিমবঙ্গে দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। ব্লকে ব্লকে কালনার মতো কৃষকরা আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে পারেন। এমনই আশঙ্কাপ্রকাশ করলেন রাজ্যের তিন গুরুত্বপূর্ণ দফতরের মন্ত্রী।

কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু, খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বা সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় তিনজনই কৃষকদের এই সংকটময় পরিস্থিতিতে ফেলার জন্য কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। কৃষি বিশেষজ্ঞরাও মনে করছেন, চাষের মরশুমে প্রয়োজনের তুলনায় কম রোপণ হলে তিন-চার মাস পরেই মাশুল দিতে হবে। খাদ্যসংকটের পাশাপাশি ধান, আলু, সবজির দাম হবে আকাশছোঁয়া।

রাজ্যে কৃষির সংকটের আগাম মোকাবিলায় অবস্থা বুঝে বুধবার নবান্নে জরুরি বৈঠক করেন মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক-সহ অন্য ব্যাঙ্কের পদস্থ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব ও রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট আটটি দফতরের সচিবরা৷ সেখানেই কৃষি ও কৃষকের সমস্যা মোকাবিলায় ব্যাঙ্কে পর্যাপ্ত নগদ টাকার জোগান রাখার বিষয়েও আশ্বাস চাওয়া হয়েছে।

সমস্যা মূলত আমন ধান কাটা যাচ্ছে না৷ সময়ে না তুলতে পারলে ধান নষ্ট হবে৷ ধান কাটতে দেরি হলে রবিচাষেও দেরি হবে৷ সুতরাং দ্রুত ধান না কাটলে পরের মরশুমেও দেরি হবে৷ পরের মরশুমের জন্যও সার, বীজ ও আনুষঙ্গিক কাজে টাকার জোগান চাই৷ আলুর ক্ষেত্রে নভেম্বরের শুরু থেকে মাত্র ৪০ শতাংশ রোপণ করা গিয়েছে।

এদিকে, রাজ্যে কতটা ধান উৎপাদন হয়েছে, তা বুঝতে আগামী শনিবার কৃষি দফতরের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক৷ জেলা প্রশাসন মারফত সামগ্রিক চিত্র পেতে চান তিনি৷ তারপরেই কবে থেকে ধান কেনা হবে, তা চূড়ান্ত হবে৷ কিন্তু সেক্ষেত্রেও নগদ টাকার সমস্যা রয়েছে।

ধানের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ধরা হয়েছে কুইন্টাল পিছু ১৪৭০ টাকা৷ এর সঙ্গে রাজ্যের উৎসাহ ভাতা যুক্ত হবে ২০ টাকা৷ ছ’টি এজেন্সির মাধ্যমে ধান কেনার পরিকল্পনা রয়েছে৷ মোট শিবির হবে ৩৩০টি৷ খাদ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, “মুর্শিদাবাদ বা বাইরে থেকে লোক এনে বর্ধমানের বিভিন্ন জায়গায় ধান কাটানো হয়৷ এঁদের দৈনিকহারে মজুরি দিতে হয়৷ টাকার সমস্যা থাকায় তা হচ্ছে না।” একই সমস্যা আলুর ক্ষেত্রেও।

কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু বলেছেন, “সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে টাকা মিলছে না৷ কৃষকরা বীজ, সার কিনতে পারছেন না৷ আলুর বীজ রোপণ করা হয়নি৷ নগদ টাকার জোগান স্বাভাবিক হতে হবে৷ আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে রাজ্যে দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।”
২৪ নভেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে