আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কয়েকদিন আগেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নবান্ন জানিয়েছিল, রাজ্যের কৃষিক্ষেত্রে সংকট চরমে ওঠেনি। গত শনিবার নবান্নের কন্ট্রোল রুমের দাবি ছিল, পরিস্থিতি মোটের উপর ‘স্বাভাবিক’। কিন্তু শুক্রবারই সরকার জানিয়েছে, নোট বাতিলের ফলে রাজ্যের ৭২ লক্ষ কৃষক পরিবার প্রভাবিত!
প্রশাসন সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের হিসাব অনুযায়ী, ছোট এবং মাঝারি মিলিয়ে রাজ্যের প্রায় ৭২ লক্ষ কৃষক পরিবারের উপর নোট বাতিলের বিরূপ প্রভাব পড়েছে। পরিবারপিছু সদস্যসংখ্যা চার ধরলে, কৃষক পরিবারগুলির দু’কোটি ৮৮ লক্ষ সদস্য দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন।
নোট-বিতর্ককে কেন্দ্র করে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্রমশ সুর চড়াচ্ছেন। সাধারণ মানুষ, কৃষক, ছোট-মাঝারি ব্যবসায়ী এবং প্রান্তিক মানুষের ‘দুর্ভোগে’র খতিয়ান তুলে ধরছেন তিনি। একে কেন্দ্র করে সর্বভারতীয় স্তরেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অন্যতম প্রতিপক্ষ হয়ে উঠতে তৎপরতা বাড়িয়েছেন নেত্রী। এই পরিস্থিতিতে সরকারের তরফে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যার নতুন হিসাব বিশেষ ইঙ্গিতবহ বলে মনে করছে প্রশাসনের একাংশ।
যদিও এই তত্ত্ব মানতে নারাজ আধিকারিকদের অপর একটি অংশ। সরকারের অন্যতম এক শীর্ষকর্তার কথায়, ‘‘বিষয়টি এভাবে দেখা ঠিক হবে না। উদ্ভুত পরিস্থিতির ফলে দুর্ভোগের মাত্রা দিনের পর দিন বাড়ছে। যে কৃষকের পরিস্থিতি আজ স্থিতিশীল, তিনি আগামিকাল সমস্যায় পড়তে বাধ্য। কারণ, তাঁকে নতুন চাষ শুরু করতে হবে। এই সময় সমবায় ব্যাঙ্কে অন্তত আড়াই হাজার কোটি টাকা থাকা প্রয়োজন। কিন্তু রয়েছে আনুমানিক ৮০০ কোটি টাকা। কেন্দ্র বা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তো কর্ণপাতই করছে না! কৃষিকাজ শুরু হওয়ার আগে সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে কৃষকেরা ঋণ না পেলে সমস্যা বেড়ে যাওয়া তো স্বাভাবিক।’
সম্প্রতি কেন্দ্রের পাঠানো প্রতিনিধিদল রাজ্যে কৃষির উপর নোট বাতিলের প্রভাব সরজমিনে খতিয়ে দেখে। প্রশাসনের শীর্ষ আমলারা পরিস্থিতির বিস্তারিত ব্যাখ্যাও দেন তাঁদের। বৃহস্পতিবারই রাজ্যকে চিঠি দিয়ে কেন্দ্র জানিয়েছে, সমবায় ব্যাঙ্কগুলিতে পাঠানোর জন্য আনুমানিক ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে।
কিন্তু রাজ্যের মতে, ওই অর্থ বৃহত্তর ক্ষেত্রে সেভাবে কাজে আসবে না। এই পরিস্থিতিতে নবান্নে ফের একটি কন্ট্রোল রুম সক্রিয় করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। সেখান থেকে শুধুমাত্র কৃষিক্ষেত্রে প্রভাবের দিকটিতে নিয়মিত নজরদারি চালানো হবে। -এবেলা।
২৬ নভেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম