বিদায় বেলায় সেই প্লেনটা মিস করবেন ওবামা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আর মাত্র ১৫টা মাস। বারাক ওবামার সাদা বাড়ি ছাড়ার কাউন্ট ডাউন শুরু হয়ে গেছে। এক বার হোয়াইট হাউসের বাসিন্দা হওয়ার পর এমন কিছু বিরল সুবিধা অভ্যাসে পরিণত হয়, যা একেবারে মার্কিন প্রেসিডেন্টের জন্য এক্সক্লুসিভ। ১০ বছরের প্রেসিডেন্ট জীবনের এরকম হাজারো অভ্যাসকে এবার ওবামার বিদায় জানানোর পালা। মাঝেমধ্যেই এখন তাঁকে শুনতে হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট পদকে বিদায় জানানোর পর কোন জিনিসটা সবথেকে বেশি মিস করবেন তিনি? উত্তরটা গত সপ্তাহেই দিয়ে দিয়েছেন। জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর মন খারাপের কারণের তালিকায় পয়লা নম্বরে থাকবে ‘সেই প্লেনটা’।
সেই প্লেনটা, মানে এয়ার ফোর্স ওয়ান। মার্কিন প্রেসিডেন্টদের ব্যবহারের জন্য এয়ার ফোর্সের বিশেষ বিমান। শুধু ওবামা নন, তাঁর পূর্বসূরিদেরও নস্টালজিয়ার কেন্দ্রে এই রাজসিক বিমানটি।
বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্টের জবানিতে, ‘প্লেনটা বেশ সুন্দর, আর এয়ার ফোর্স ওয়ানে আমার মালপত্তরও কোনদিন হারিয়ে যায়নি’।
এয়ার ফোর্স ওয়ান আসলে কোনও একটি প্লেন নয়, প্রতিরক্ষা দফতরের যে বিলাস বহুল প্লেন আমেরিকের প্রেসিডেন্টের জন্য বিশেষ ভাবে নিয়োজিত সেই সবকটাই এয়ার ফোর্স ওয়ানের ক্যাটাগরিতে পরে। এই মুহূর্তে মার্কিনি ভাঁড়ারে এই ধরণের তিনটি প্লেন থাকলেও সবথেকে সচল একটিই। ৪,০০০ বর্গফুটের প্লেনটির ভিতরে চারটি স্তর। আছে একটি অফিস, একটি বেডরুম, কনফারেন্স রুম, লাইব্রেরি এমনকি আপত্কালীন অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থাও। আকাশে নিজে থেকেই রিফুয়েল করতে পারে প্লেনটি। পারে প্রয়োজনে শক্তিশালী মিসাইল ছুঁড়তেও।
এই বিমানটি আসলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গর্ব, পরিচিতির প্রকাশ। যাকে নিয়ে, সমনামেই তৈরি হয়ে গেছে আস্ত একটা হলিউডি সিনেমা। বদলেছে এর মডেল, এক এক মডেলের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এক এক ডাকসাইটে মার্কিন প্রেসিডেন্টের নাম আর অনেকটা ইতিহাস।
তবে বাস্তবটা স্বীকার করে নেওয়াই ভাল। পৃথিবীর কোনও দেশের প্রেসিডেন্টের লাগেজই সহজে হারায় না। প্লেনটা অসাধারণ, কিন্তু সেটি এবার বৃদ্ধও হয়েছে। এই স্মার্টফোনের যুগে সব ক্ষেত্রেই তুরন্ত্ গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে তারও খোলনলচে বদলে ফেলা আবশ্যক বৈকি।
এয়ারফোর্স ওয়ান
তবে এখনই নয়, এয়ার ফোর্স ওয়ানের নয়া অবতারে চাপার সৌভাগ্য ওবামার আসন্ন উত্তরসূরীও হবে কিনা সে বিষয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সম্ভবত আগামী সপ্তাহে বোয়িংয়ের সঙ্গে প্রেসিডেন্টের নয়া এয়ারক্রাফট বানানোর প্রাথমিক চুক্তিটা সেরে ফেলবে। তবে সেই নয়া প্রযুক্তির বিমান আকাশে উড়তে উড়তে অন্তত ২০২৩।
২০১২ সালে বিল কিল্টনের সঙ্গে প্রচারে গিয়ে ঠাট্টার ছলেই ওবামা বলে ছিলেন ‘স্বীকার করো, বিল, প্রেসিডেন্ট পদ নয়, তুমি আসলে প্লেনটাকে মিস করছো। আর, হ্যাঁ, আমিও করবো।’ তিন বছর আগের এই মন্তব্যই ওবামার এয়ার ফোর্স ওয়ানের উপর বিশেষ টানের জানান দিয়েছিল।
মোদ্দা কথা হল এয়ার ফোর্স ওয়ানের সঙ্গে ওবামার গাঁটছড়া ছিন্ন হচ্ছেই। খুব চাইলেও আর কটাদিন পরেই এর উড়ানের অংশীদার হওয়ার অধিকার তাঁর খতম হবে। এরপর হিলারি ক্লিন্টন বা ডোনাল্ড ট্রাম্প বা অন্য কেউ যখন এই বিমানে চেপে আকাশ পাড়ি দেবেন, তখন খানিকটা হিংসা কি হবে না ওবামার? - আনন্দবাজার
২০ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/আসিফ/এআর
�