শনিবার, ০৫ আগস্ট, ২০১৭, ০৫:০০:২৭

স্বেচ্ছায় নাকি প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে ধর্মান্তরণ : সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন

স্বেচ্ছায় নাকি প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে ধর্মান্তরণ : সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 'লাভ জিহাদ' নাকি ইচ্ছাকৃত ভাবেই ধর্মান্তরণ! মুসলিম এক যুবককে বিয়ে করার জন্য হিন্দু তরুণীর ধর্ম পরিবর্তনকে ঘিরে শুক্রবার ভারতের শীর্ষ আদালতের সামনে এই প্রশ্নই উঠে এল। আগামী ১০ দিনের মধ্যে তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-কে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

ধর্মান্তরণকে 'লাভ জিহাদ' হিসাবে তুলে ধরে এই প্রথম সুপ্রিম কোর্টে মামলা হল। ঘটনাটি ঘটে গত বছরের ডিসেম্বরে। ২৪ বছরের ওই তরুণীর জন্ম ভারতের কেরালার একটি হিন্দু পরিবারে। ২০১৬ সালের আগস্টে একটি ম্যারেজ ওয়েবসাইটে ওই তরুণীর সঙ্গে আলাপ হয় সাফিন জাহানের।

সেখান থেকেই ঘনিষ্ঠতা। আর তার কয়েক মাস পর অর্থাত্‍ ডিসেম্বরে ধর্ম এবং নাম বদলে মুসলিম হয়ে ওঠেন তরুণী। ডিসেম্বরেই তারা বিয়ে করেন। কিন্তু, তরুণীর পরিবার এই বিয়ে মানতে পারেননি। এই বিয়ে আসলে লাভ জিহাদের ফল, তার মেয়ের 'মগজধোলাই' করা হয়েছে বলে কেরালা হাইকোর্টে মামলা করেন ওই তরুণীর বাবা।

মামলায় কেরালা হাইকোর্ট এই বিয়েকে 'লাভ জিহাদ' বলে অবৈধ ঘোষণা করে। সাফিনের থেকে ওই তরুণীকে আলাদা করে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যায় তরুণীর পরিবার। কিন্তু, ওই যুবক এখানে থেমে যাননি। এর পরেই কেরালা হাইকোর্টকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন তিনি।

সাফিনের আইনজীবী কপিল সিব্বল সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন, ওই তরুণী প্রাপ্তবয়স্ক। তিনি কাকে বিয়ে করবেন বা কোন ধর্ম অনুসরণ করবেন তা সম্পূর্ণ তার ইচ্ছা। এতে পরিবার কোনও ভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। পাল্টা তরুণীর পরিবারের অভিযোগ, তরুণীর মগজধোলাই করা হয়েছে। তিনি একটা চক্রান্তের ফল।

যুবক সাফিন এক জন অপরাধী এবং তিনি আইএস ও 'পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া'র সঙ্গে যুক্ত। এই সমস্ত সংগঠনের নির্দেশেই সাফিন ওই তরুণীকে ধর্ম পরিবর্তন করতে বাধ্য করেছেন। শুধু ওই তরুণীই নন, কেরালা লাভ জিহাদের ঘটনা যে আকছার ঘটে সে দিকেও আদালতের দৃষ্টিপাত করেন তিনি। কেরালা হাইকোর্টের রায় তুলে ধরে তরুণীর পরিবার সুপ্রিম কোর্টকে জানায়, বিচারপতি নিজে তরুণীর সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তার পরই এই বিয়েকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন।

ওই দিন দু'পক্ষের সওয়াল শোনার পরই সুপ্রিম কোর্ট এনআইএ-কে এই ঘটনার তদন্তভার দেয়। কী এই 'লাভ জিহাদ'? অনেকে একে রোমিও জিহাদ বলে থাকে। এতে মুসলিম যুবকেরা অন্য ধর্মের তরুণীদের প্রেমে ফাঁসিয়ে তাদের ধর্ম বদলে মুসলিম করে তোলেন।

২০০৯ সালে এই বিষয়টি প্রথম কেন্দ্রের নজরে আসে। প্রেমে ফাঁসিয়ে কেরল এবং ম্যাঙ্গালোরে বহু তরুণীর ধর্ম বদলে দেওয়ার খবর সামনে আসে সে সময়। কিন্তু, মুসলিম সংগঠনগুলি বরাবরই লভ জিহাদকে অস্বীকার করে এসেছে।
এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে