মঙ্গলবার, ২২ জুলাই, ২০২৫, ১০:১৫:৪০

অবশেষে সত্যি হলো ডোনাল্ড ট্রাম্পের সেই পূর্বাভাস!

অবশেষে সত্যি হলো ডোনাল্ড ট্রাম্পের সেই পূর্বাভাস!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কোকা-কোলা মঙ্গলবার জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদিত আখের চিনি দিয়ে তৈরি একটি নতুন কোক এই শরতেই সে দেশের বাজারে আনছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহেই এই পরিকল্পনার আভাস দিয়েছিলেন।

বিশ্বের অনেক দেশেই কোকা-কোলা মূলত সাধারণ চিনিই ব্যবহার করে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক দশক ধরে তারা তুলনামূলক সস্তা কর্ন সিরাপ বা ভুট্টার সিরাপ ব্যবহার করে আসছে।

ট্রাম্পের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র কর্ন সিরাপের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। যদিও পুষ্টিবিদদের মতে, এই দুই ধরনের চিনির মধ্যে পুষ্টিগুণের দিক থেকে বড় কোনো পার্থক্য নেই।

বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে প্রকাশিত ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে মঙ্গলবার কোকা-কোলা জানায়, তারা শরৎকালে ‘যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদিত আখের চিনির একটি সংস্করণ’ বাজারে আনবে। নতুন এই পণ্য তাদের বিদ্যমান পণ্যের লাইনআপের সম্পূরক হিসেবে কাজ করবে এবং গ্রাহকদের আরো বিকল্প দেবে।

কোকা-কোলার প্রধান নির্বাহী জেমস কুইনসি বলেন, ‘ভোক্তাদের পছন্দ অনুযায়ী আমরা উপলব্ধ সব ধরনের মিষ্টিকরণ পদ্ধতি কাজে লাগাতে চাই।’

কুইনসি জোর দিয়ে বলেন, কোকের মূল সংস্করণে আগের মতোই কর্ন সিরাপ ব্যবহৃত হবে; আখের চিনিযুক্ত সংস্করণটি বিকল্প হিসেবে থাকবে। একই সঙ্গে জানান, যুক্তরাষ্ট্রে কম্পানিটির অন্যান্য কয়েকটি ব্র্যান্ডেও আখের চিনি ব্যবহৃত হচ্ছে, যেমন লেমনেড, কফি ও ভিটামিন ওয়াটার।

ট্রাম্প গত সপ্তাহে ট্রুথ সোশ্যালে জানান, কম্পানিটি আখের চিনি ব্যবহারে সম্মত হয়েছে, যা অনেককেই চমকে দেয়।

 তিনি লিখেছিলেন, ‘এটা ওদের জন্য দারুণ একটি পদক্ষেপ হবে। দেখবেন, এটা আরো ভালো!’
২০২৪ : হাউ ট্রাম্প রিটুক দ্য হোয়াইট হাউস নামের সাম্প্রতিক একটি বইতে বলা হয়েছে, ট্রাম্প চলতি বছরের জানুয়ারিতে কোকা-কোলার প্রধানের সঙ্গে এই বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন এবং আলোচনার সময় তিনি বিলিয়নেয়ার ও রাজনীতিতে প্রভাবশালী চিনি চাষি হোসে ফানজুলকেও ফোনে যুক্ত করেছিলেন।

ট্রাম্প তখন লিখেছিলেন, ‘আমি কোকা-কোলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে কোকে সত্যিকারের আখের চিনি ব্যবহারের বিষয়ে কথা বলেছি এবং তারা এতে সম্মত হয়েছে।’

সে সময় কোকা-কোলার একজন মুখপাত্র বলেছিলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আগ্রহের আমরা প্রশংসা করি।’

তবে ট্রাম্প কেন এই পরিবর্তনের পক্ষে এত জোর দিচ্ছেন, তা তিনি স্পষ্ট করেননি।

এই পরিবর্তন অবশ্য তার পছন্দের পানীয় ডায়েট কোকে কোনো প্রভাব ফেলবে না। হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর ট্রাম্প আবারও ওভাল অফিসে সেই বিশেষ বোতাম বসিয়েছেন, যেটি চাপলে তার জন্য ডায়েট কোক পরিবেশন করা হয়।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে ‘মেক্সিকান কোক’ নামে বাজারজাত একটি পণেও কর্ন সিরাপের বদলে ঐতিহ্যবাহী চিনি ব্যবহার করা হয়, যা সাধারণত কাঁচের বোতলে ও তুলনামূলক বেশি দামে বিক্রি হয়।

বিংশ শতাব্দীর সত্তরের দশকে কর্ন সিরাপ জনপ্রিয়তা পায়। যুক্তরাষ্ট্রে ভুট্টা চাষিদের জন্য সরকারি ভর্তুকি ও আখের চিনির ওপর উচ্চ আমদানি শুল্ক থাকায় এর ব্যবহার ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। তবে কর্ন থেকে দূরে সরে যাওয়া ট্রাম্পের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত মিডওয়েস্টের কর্ন বেল্টে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।

হাই-ফ্রুক্টোজ কর্ন সিরাপ (এইচএফসিএস) ও আখের চিনি (স্যুক্রোজ)—উভয়ই মূলত ফ্রুক্টোজ ও গ্লুকোজ দিয়ে তৈরি, তবে এদের রাসায়নিক গঠন ভিন্ন। গবেষণা বলছে, এই গঠনগত পার্থক্য স্বাস্থ্যঝুঁকিতে বড় ধরনের কোনো পার্থক্য তৈরি করে না। ট্রাম্পের পছন্দের ডায়েট কোকে মিষ্টি করার জন্য অ্যাসপারটেম ব্যবহার করা হয়, যেটিকে আন্তর্জাতিক ক্যান্সার গবেষণা সংস্থা ‘সম্ভাব্য ক্যান্সারজনক পদার্থ’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে।- বিবিসি, এএফপি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে