আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ডোকলাম থেকে ভারতীয় সেনা হঠাতে ‘ছোটখাটো’ সেনা অভিযান চালাতে যাচ্ছে চীন! আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই চীন এই অপারেশন চালাবে! সম্প্রতি চীনা সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসে প্রকাশিত প্রক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে ডোকলামে ভারতীয় ও চীনা সেনা মুখোমুখি দাঁড়িয়ে রয়েছে। বারবার বলা সত্ত্বেও ভারত পিছু হটছে না। আর সে কারণেই চীনের এ সিদ্ধান্ত।
আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, সাংহাই একাডেমি অব সোশ্যাল সায়েন্সেসের এক রিসার্চ ফেলো হু ঝিইয়ংয়ের বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে গ্লোবাল টাইমস। হু ঝিইয়ং বলেছেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সেনা প্রত্যাহার করতে বলবে চীন। তা যদি না করা হয় তাহলে আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যেই ওই অভিযান চালানো হবে। আর বেশিদিন চীনা সীমান্তে ভারতীয় সেনার অনুপ্রবেশ সহ্য করবে না চীন।
বৃহস্পতিবার সংসদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ যুদ্ধের পথে না গিয়ে কূটনৈতিক পথেই ডোকলাম সমস্যা সমাধানের কথা বলেছেন। এজন্য দুদেশকেই আগে ডোকলাম থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে এবং তারপর আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজে বের করার কথা বলেন সুষমা। এর একদিন পরই গ্লোবাল টাইমসে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চীনের ব্যাপারে ‘কঠোর অবস্থান’ নিয়ে তার দেশকে যুদ্ধের দিকে নিয়ে যাচ্ছে এবং তার দেশের জনগণের ভাগ্য নিয়ে ‘জুয়া’ খেলছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) ‘বিস্ময়কর’ শক্তি সম্পর্কে মোদির ওয়াকিবহাল থাকা উচিত। পিএলএ ডোকলামে মোতায়েন ভারতীয় সেনাকে ‘নিশ্চিহ্ন’ করতে সক্ষম।
আনন্দবাজার পত্রিকা বলেছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদে ভুটানের সঙ্গে ভারতের ‘বিশেষ এবং অনন্য’ সম্পর্কের কথা বললেও কার্যক্ষেত্রে এতদিনের পরম মিত্র ভুটান যে ভারতের হাত থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে যাচ্ছে, তা ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। ৩০ জুন ভারত জানিয়েছিল, ডোকলামে চীনের রাস্তা তৈরির বিষয়টি ভুটানই দিল্লিকে জানিয়েছে এবং সেনা পাঠাতে অনুরোধ করেছে।
কিন্তু এ বক্তব্য উড়িয়ে দিয়ে দিল্লির চীনা দূতাবাস শনিবার দাবি করেছে, এ ব্যাপারে ভুটানের কোনো ভূমিকাই নেই। ভারত নিজে থেকেই সেখানে সেনা মোতায়েন করেছে। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মুখপাত্র গোপাল ওয়াগলে এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি। তিনি শুধু বলেছেন, ‘ভুটানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’
কূটনীতিকরা বলছেন, বেইজিংয়ের সঙ্গে থিম্পুর ঘনিষ্ঠতা বেশ কিছুদিন ধরেই স্পষ্ট হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের সাধের বিবিআইএন মোটর ভেহিক্যাল চুক্তিতে ভুটানই পানি ঢেলে দিয়েছে। চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের পাল্টা হিসেবে সার্কভুক্ত বাকি দেশগুলোর মধ্যে এই যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়তে উদ্যোগী হয়েছিল মোদি সরকার। কিন্তু ভুটানের ন্যাশনাল কাউন্সিল এতে বাধা দিয়েছে। ভারত মনে করছে, এর পেছনে বেইজিংয়ের হাত রয়েছে।
এমটিনিউজ/টিটি/পিএস