বৃহস্পতিবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৭, ১১:১৫:২৮

জনসন বেবি পাউডার মেখে ক্যান্সার, ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তি সাড়ে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা

জনসন বেবি পাউডার মেখে ক্যান্সার, ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তি সাড়ে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বের সবচেয়ে বড় হেলথ কেয়ার সংস্থা ‘জনসন অ্যান্ড জনসন’-এর বিরুদ্ধে উঠল মারাত্মক অভিযোগ। ৬২ বছরের এক মহিলা দাবি করেছেন, ওই সংস্থার পাউডার মেখে তার ওভারিতে ক্যান্সার হয়েছে।

ক্যালিফোর্নিয়ার একটি আদালতে আক্রান্ত মহিলা এই নিয়ে মামলা রুজু করায় সম্প্রতি আদালত ‘জনসন অ্যান্ড জনসন’-কে ৪১৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের (বাংলাদেশী মুদ্রায় তিন হাজার তিন ৮৭ কোটি ৭০ লাখ ৮০ হাজার টাকা) বিপুল ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
প্রশ্ন উঠছে, বিশ্বের একাধিক দেশে যে সংস্থার পাউডার-ক্রিম-শ্যাম্পু প্রায় নিশ্চিন্তে নিজের সদ্যোজাত শিশুর ক্ষেত্রে ব্যবহার করেন মায়েরা, সেই সংস্থার বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ উঠলে অভিভাবকদের কী করা উচিত?

ঠিক কী ঘটেছে ওই মহিলার সঙ্গে?

সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, ৬২ বছরের ইভা ইচাভেরিয়া আদালতকে জানান, তিনি ১১ বছর বয়স (১৯৫০) থেকে ২০১৬ পর্যন্ত জনসন বেবি পাউডার ব্যবহার করতেন। কিন্তু সম্প্রতি পরিচিত এক মহিলাকে ওভারিয়ান ক্যানসারে আক্রান্ত হতে দেখেন। তিনিও ওই একই পণ্য ব্যবহার করতেন।

তখনই ইভার সন্দেহ হয়। কারণ, এর আগে মার্কিন মুলুকে বেশ কিছু মহিলা ওই একই সংস্থার পাউডার ব্যবহার করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। ২০০৭-এ ইভার দেহে ওভারি ক্যানসার ধরা পড়ে।

ইভার অভিযোগ, জনসন তাদের বেবি পাউডারের গায়ে যদি একটি বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ লিখে রাখত, যে দীর্ঘদিন ওই পাউডার ব্যবহার করলে ক্যানসারের সম্ভাবনা তৈরি হয়, তাহলে তিনি ওই পাউডার এতদিন ধরে ব্যবহার করতেন না। তার আইনজীবীও আদালতকে জানান, ‘জনসন অ্যান্ড জনসন’ সংস্থা জানত, তাদের ট্যালকম পাউডার ব্যবহারে ক্যানসার হতে পারে কিন্তু সংস্থাটির বিজ্ঞাপনে কখনও এই বিষয়ে সতর্ক করেনি।

পালটা সংস্থার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ইউএস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, একাধিক সরকারি সংস্থার পরীক্ষাতে ওই অভিযোগের কোনো সত্যতা মেলেনি। অভিযোগকারিনীর বক্তব্যের কোনো বৈজ্ঞানিক যুক্তি নেই। যদিও আক্রান্ত মহিলা তার যে মেডিক্যাল সার্টিফিকেট আদালতে জমা দেন, সেখানে লেখা, ‘দীর্ঘদিন মারাত্মক ক্ষতিকারক ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করাতেই তার ওভারিতে ক্যান্সার হতে পারে।’

দীর্ঘ সওয়াল-জবাবের পর আদালত ‘জনসন অ্যান্ড জনসন’ সংস্থাকে নির্দেশ দেয়, ক্ষতিপূরণ হিসাবে ইভাকে ৬৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ও শাস্তি হিসাবে ৩৪০ মিলিয়ন মার্কিন দিতে হবে অভিযুক্ত সংস্থাকে।

এই প্রথম নয় অবশ্য, এর আগে ২০১২-তেও এক মহিলার ক্যান্সার ধরা পড়ে জনসন বেবি পাউডার ব্যবহার করে। সেক্ষেত্রেও আদালত ভার্জিনিয়া নিবাসী ওই মহিলাকে ১১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেয়। নিউ জার্সিতেও এরকম দু’টি অভিযোগ উঠেছে সম্প্রতি। সবমিলিয়ে এই মুহূর্তে ১০০০-এরও বেশি মামলা জনসন সংস্থার বিরুদ্ধে ঝুলে রয়েছে।
এমটিনিউজ২৪ডটকম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে