রবিবার, ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ০১:০৫:১২

সীমান্ত উত্তেজনার মধ্য যে তিন কারণে চীনের সেনা প্রত্যাহার

সীমান্ত উত্তেজনার মধ্য যে তিন কারণে চীনের সেনা প্রত্যাহার

আশীষ বিশ্বাস, কলকাতা থেকে : হিমালয়ের কোল ঘেঁসে ডোকলামে ভারত ও চীন তাদের মুখোমুখি অবস্থান থেকে সরে আসায় বিশ্ব স্বস্তি পেয়েছে। হয়েছে হতবাক। সীমান্তে চীনা সেনাবাহিনীর আক্রমণাত্মক মনোভঙ্গি, এবং ভারতের পাল্টা হুঁশিয়ারি গুরুতর উৎকণ্ঠার জন্ম দিয়েছিল।

উভয় দেশ কোনও বড় ধরনের অঘটন ছাড়াই সেনা প্রত্যাহার করায় তাই বিস্ময়ের জন্ম। চীনের সেনা প্রত্যাহারের নেপথ্য কারণ খুঁজে দেখার চেষ্টায় কলকাতাভিত্তিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের সঙ্গে কথা বলা হয়। বিশ্লেষকরা তিনটি কারণ তুলে ধরেছেন তারা।

প্রথম কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা চীনে অনুষ্ঠিতব্য ব্রিকস সম্মেলনের কথা তুলে ধরেছেন। ৩ সেপ্টেম্বর চীনের শিয়ামেন শহরে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনের আগে চীন ব্রিকসের সদস্য ভারতের সঙ্গে কোনও সংঘর্ষে যেতে চায়নি।

কারণ এতে ব্রিকসের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। জটিলতায় পড়তে পারে বেশ কয়েকটি অবকাঠামোগত প্রকল্প। এসব প্রকল্পের অন্তত ৭টির জন্য ব্যাংক ঋণ অনুমোদিত হয়ে আছে। এর মধ্যে তিনটি বাস্তবায়িত হবে ভারতে। চীনের জন্য এসব প্রকল্প অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

দ্বিতীয় কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা বলেছেন সামরিক সংঘাতে পরাজয়ের আশঙ্কার কথা। ডোকলামে ভারতের সেনাদের উপস্থিতি ছিল উচ্চতর ভূমিতে। ফলে অসুবিধাজনক অবস্থানে পড়ে যায় চীনের সেনারা। ভারতীয়দের বিরুদ্ধে কোনও অভিযান চালাতে গেলে তাতে অনেক সময়, শ্রম ও অস্ত্রের ক্ষতি।

উভয় দেশের কাছে পারমাণবিক বোমার বিকল্প থাকলেও সীমান্তে প্রচলিত অস্ত্রেই একে অন্যকে মোকাবিলা করছিল দুই দেশ। ফলে চীন বুঝতে পেরেছে সেনা সংখ্যা ও সরঞ্জামে এগিয়ে থাকলেও যুদ্ধে খুব একটা অগ্রগতি পাওয়া যাবে না।

দিল্লিতে অবস্থানরত এক বিশ্লেষক জানান, ভারতের সামরিক শক্তি ও প্রস্তুতি সম্পর্কে চীন ওয়াকিবহাল। কয়েক মাস আগে চীনের এক কূটনীতিক স্বীকার করেছিলেন, ভারতের সঙ্গে সীমান্তে কোনও যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত জয় পেলেও চীনকে বেশ ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।

তৃতীয় ও গুরুত্বপূর্ণ কারণটিকে বাণিজ্যিক বলছেন বিশ্লেষকরা। মুখোমুখি অবস্থানের পর দিল্লি সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ দেশগুলোকে অবহিত করে। যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের অবস্থানকে উচ্চ কণ্ঠে স্বাগত জানিয়েছে ভারত।

পরিসংখ্যান অনুসারে, চীনের ভারতে রফতানির তুলনায় ভারতে চীনের রফতানির পরিমাণ পাঁচগুণ। সংকট শুরু হওয়ার পর চীনা পণ্যে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি বিবেচনা করেছিল ভারত।

দিল্লির সূত্র মতে, চীনা আইটি পণ্যে ভারতের নিষেধাজ্ঞা আরোপের সম্ভাব্যতায় চীনের বাণিজ্যমহলকে উদ্বিগ্ন করে তোলে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ব্রিকস সম্মেলনের পর হয়ত চীনের অবস্থান পাল্টে যেতে পারে। সম্মেলন শেষেই আন্তর্জাতিক সীমান্তে আবারও আগের অবস্থায় ফিরে আসতে পারে চীন। বাংলা ট্রিবিউন

এমটিনিউজ/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে