রবিবার, ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১১:৪১:৫৯

৮ দিনে ৬০ হাজার রোহিঙ্গা ঢুকেছে বাংলাদেশে: জাতিসংঘ

৮ দিনে ৬০ হাজার রোহিঙ্গা ঢুকেছে বাংলাদেশে: জাতিসংঘ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ‘বর্বরোচিত’ সেনা অভিযান শুরু হওয়ার পর গত ৮ দিনে অন্তত ৬০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে ঢুকেছে বলে নিশ্চিত করেছে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। স্থানীয় মানুষ ও বিভিন্ন দাতা সংস্থার কাছ থেকে ধারণা নিয়ে এ সংখ্যা উল্লেখ করলেও বাস্তব সংখ্যা আরও বেশি বলে জানিয়েছেন সংস্থার মুখপাত্র ভিভয়ান ট্যান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা প্রতিনিয়তই বাড়ছে। ইউএনএইচসিআরের ঢাকা কার্যালয়ে শনিবার এসব তথ্য জানানো হয়।

উল্লেখ্য, গত ৩১ আগষ্ট রোহিঙ্গাদের বিষয়ে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি অনানের একটি তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের দিন রাখাইনের বেশ কয়েকটি পুলিশ পোস্টে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এর পরপরই ‘সন্ত্রাসীদের’ রুখতে রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযান শুরু করে মিয়ানমার। এ অভিযানে এখথন পর্যন্ত ৪০০ জনকে হত্যার কথা শিকার করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। যদিও সেখান থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বলছেন এ সংখ্যা আরও বহুগুণ বেশি। তাদের ভাষ্যমতে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী শিশুদের জবাই করছে, শিরোশ্ছেদ করছে, নারীদের ধর্ষণের পর হত্যা করছে, পুরুষদেরও বর্বরোচিত নির্যাতনের পর হত্যা করছে, গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিচ্ছে।

মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, স্যাটেলাইট চিত্রের মাধ্যমে তারা নিশ্চিত হতে পেরেছে যে রাখাইনে বহু গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।

রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে রোহিঙ্গারা। ২ সেপ্টেম্বর তোলা হয়েছে ছবিটি।  

এদিকে ১ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার সরকার জানিয়েছে রাখাইন রাজ্যে ২ হাজার ৬০০ বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে দেশটির সরকার এজন্য আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) কে দায়ী করেছে, যে গোষ্ঠিটি ৩১ আগষ্ট নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার দায় স্বীকার করেছিল। যদিও পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বলছে এসব সেনাবাহিনীরই কাজ।

সেনা নির্যাতন থেকে বাঁচতে নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে গিয়ে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪০ জন ডুবে মারা গেছে যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। নির্যাতন থেকে অনেক হিন্দুও বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের উপপরিচালক ফিল রবার্টসন বলেন, স্যাটেলাইটে তোলা নতুন ছবিতে দেখা গেছে একটি মুসলিম গ্রামে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।  এ থেকে সেখানকার পরিস্থিতি যতটুকু খারাপ বলে প্রথমে ধারণা করা হচ্ছিল তার চেয়েও বেশি শোচনীয় হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে