মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ০২:৩৬:০৮

ভয়াবহ রূপে আঘাত হানলো মারিয়া, লণ্ডভণ্ড প্রধানমন্ত্রী রুজভেল্টের বাড়ি

ভয়াবহ রূপে আঘাত হানলো মারিয়া, লণ্ডভণ্ড প্রধানমন্ত্রী রুজভেল্টের বাড়ি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চলতি বছরে আটলান্টিক মহাসাগরের উত্তর-পশ্চিম অংশে তৈরি হওয়া চতুর্থ বড় ধরনের হারিকেন মারিয়া পাঁচ মাত্রার ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়ে ডমিনিকা দ্বীপপুঞ্জে আঘাত হেনেছে।

সোমবার সন্ধ্যায় হারিকেনটির বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ২১৫ কিলোমিটার পৌঁছানোর পর এর মাত্রা বাড়িয়ে একলাফে পাঁচ মাত্রার সাফির-সিম্পসন স্কেলের সর্বোচ্চ মাত্রায় নেওয়া হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি), খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

এর মাত্র ৯০ মিনিটের মধ্যে ‘ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ’ চালানোর ক্ষমতাসম্পন্ন হারিকেনটির কেন্দ্র প্রায় সরাসরি ডমিনিকার ওপর দিয়ে পার হয়।

মারিয়া আঘাত হানার সময় নিজের ফেইসবুক পোস্টে ডমিনিকার প্রধানমন্ত্রী রুজভেল্ট স্কেরিট জানান, ঝড়ে তার বাড়ির ছাদ উড়ে গেছে।

বলেন, ‘আমি পুরোপুরি হারিকেনটির কৃপার ওপর আছি। বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে।’

এর পরপরই তাকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এছাড়া পূর্ব ক্যারিবীয় অঞ্চলের ৭২ হাজার বাসিন্দার এই দ্বীপটিতে আর কী ঘটেছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

ডমিনিকার বিমানবন্দর ও সমুদ্র বন্দরগুলোর কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

প্রায় হারিকেন আরমার পথ ধরে এগিয়ে যাওয়া মারিয়া বুধবার পুয়ের্তো রিকোতে ও ইউএস ভার্জিন আইল্যান্ডে আঘাত হানতে পারে। এখানে পাঁচ মাত্রার এ হারিকেনটির তাণ্ডবে ঘরবাড়ির ছাদ উড়ে যেতে পারে, ব্যাপক বৃষ্টিপাত ও জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সতর্ক করা হয়েছে।

মারিয়ার মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত হতে ভার্জিন আইল্যান্ড ও পুয়ের্তো রিকোর লাখ লাখ বাসিন্দা এক থেকে দুদিন সময়ে পেতে পারে বলে এতে বলা হয়েছে।

নিজের শক্তি ধরে রাখলে ৮৫ বছরের মধ্যে পুয়ের্তো রিকোতে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী হারিকেন হবে এটি। শেষ যে বড় হারিকনেটি দ্বীপটিতে আঘাত হেনেছিল সেটি ছিল তিন মাত্রার।


ফ্লোরিডায় ইরমার আঘাত, মৃতের সংখ্যা বেড়ে অর্ধশত

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা রাজ্যে হারিকেন ইরমার আঘাতে সোমবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫০ জনে দাঁড়িয়েছে। গত সপ্তাহে ঝড়টি এই রাজ্যে আঘাত হানে।

ফ্লোরিডা জরুরি ব্যবস্থাপনা বিভাগ সরকারিভাবে মৃতের সংখ্যা ৩৪ বলে উল্লেখ করলেও কিসের আটজন এবং উত্তর মিয়ামির হলিউডে একটি নার্সিং হোমে আরো যে আটজনের মৃত্যু হয়েছে তা ওই সরকারি হিসেবের সাথে যোগ করা হয়নি।

এদিকে ফেডারেল এমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি (এফইএমএ) জানায়, হারিকেন ইরমার আঘাতে কিসের এক চতুর্থাংশ ঘরবাড়ি লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে।

বাহামায় সমুদ্র উধাও

বাহামা দ্বীপপুঞ্জ থেকে আসা বিভিন্ন ছবিতে দেখা গেছে, ঘূর্ণিঝড় ইরমার অভিঘাতে সেখানে কোনো কোনো জায়গায় সমুদ্র বহুদূর পর্যন্ত উধাও হয়ে গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন লং আইল্যান্ড নামে একটি দ্বীপের চারপাশে সমুদ্রের পানি যেন হঠাৎই শূন্যে মিলিয়ে গেছে।

বিশেষজ্ঞরা অবশ্য জানাচ্ছেন, হারিকেনের ফলে যে প্রবল নিম্নচাপ সৃষ্টি হয় তা অনেক সময় এভাবে উপকূলীয় অঞ্চল থেকে সমুদ্রের পানিকে শুষে নেয় - তখন বাইরে বেরিয়ে পড়ে পানির নিচে থাকা কর্দমাক্ত সমুদ্রতল।

বাহামার ওই সমুদ্র ও সোনালি সৈকত কীভাবে হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে - অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়াতে তার ছবি ও ভিডিও পোস্ট করেছেন।

তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়ের এই প্রভাবটা সাময়িক।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে