আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রচলিত অস্ত্রে সমৃদ্ধ হওয়ার অধিকার বিশ্বের প্রতিটি দেশেরই রয়েছে। এই অধিকার ব্যবহারের ক্ষেত্রে ইরান নিজস্ব প্রযুক্তিতে প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গেছে।
ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির হাতামি এ সম্পর্কে বলেছেন, ইরানের বিরুদ্ধে শত্রুর ষড়যন্ত্রের গভীরতা বিবেচনায় এনে তেহরান প্রতিরক্ষা সক্ষমতার দিক দিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।
পারস্য উপসাগরের মতো একটি অতি স্পর্শকাতর অঞ্চলে ইরানের অবস্থান এবং তেহরান শুরু থেকেই এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা রক্ষা করাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। তবে ইসরাইলের পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য প্রধান হুমকি হয়ে রয়েছে।
সেইসঙ্গে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে আমেরিকার কাছ থেকে ১১ হাজার কোটি ডলারের সমরাস্ত্র কেনার চুক্তি এই হুমকিকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।
পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের কিছু দেশ মনে করে, পশ্চিমা শক্তিগুলো তাদের পাশে থাকলেই তাদের ক্ষমতা নিরাপদ থাকবে। এসব দেশের এই ভ্রান্ত ধারণা মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশকে চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এ ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে ইরান নিজের প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে শক্তিশালী করছে।
কিন্তু ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে সে ব্যাপারে তেহরান কারো হুমকির তোয়াক্কা করছে না। এক্ষেত্রে ইরানের অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার। প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল আমির হাতামি যেমনটি বলেছেন: ইরানের জাতীয় শক্তি ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে দুর্বল করে ফেলার লক্ষ্যে শত্রু রা কাজ করছে। কিন্তু এদেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতার বিন্দুমাত্র ক্ষতি কাউকে করতে দেয়া হবে না।
এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক ব্যাপার যে, যতদিন পর্যন্ত ইরানের সঙ্গে হুমকির ভাষায় কথা বলা হবে ততদিন পূর্ণ শক্তিমত্তার সঙ্গে নিজের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা শক্তিশালী করে যাবে তেহরান। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী সম্প্রতি এক ভাষণে তাঁর দেশের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ব্যাপারে আমেরিকার সঙ্গে সুর মেলানোয় ইউরোপের সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, ইরানের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ও মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের কার্যকলাপের ব্যাপারে ইউরোপীয় দেশগুলোর উচিত আমেরিকার সঙ্গে সায় দেয়া থেকে বিরত থাকা। কারণ, আমরা যেমন আমেরিকার বলপ্রয়োগের ভাষা পছন্দ করি না তেমনি ওয়াশিংটনের সঙ্গে একই তালে কথা বলা যেকোনো শক্তিকেও প্রত্যাখ্যান করব।
বাস্তবতা হচ্ছে, ইরান কখনোই পরমাণু অস্ত্রসহ কোনো ধরনের অপ্রচলিত অস্ত্র উৎপাদন করতে চায়নি এবং ভবিষ্যতেও করবে না। কিন্তু শত্রুর সম্ভাব্য আগ্রাসন প্রতিহত করার লক্ষ্যে প্রচলিত অস্ত্রসস্ত্রে সর্বোচ্চ মাত্রায় শক্তিশালী হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাবে।-পার্সটুডে
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস