আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রায় ৫০০ দিনেরও বেশি আগরতলায় মাটি কামড়ে পড়েছিলেন তিনি। পালটেছেন খাদ্যাভ্যাস, শিখেছেন স্থানীয় ভাষাও। ত্রিপুরায় শূন্য থেকে শিখরে পৌঁছে দিতে এমনই অসাধ্যসাধন করেছেন তিনি। ২৫ বছরের বাম দুর্গে পদ্মা ফুটিয়েছেন।
সুনীল দেওধর, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রচারকের এহেন মাটি কামড়ে পড়ে থাকা লড়াইয়ের জোরেই লাল গড়ে পদ্ম ফুটেছে, এমনটাই বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। আদ্যন্ত মারাঠি এই মানুষটিই ত্রিপুরাজয়ের নেপথ্য কারিগর। ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটে বারাণসীতে নরেন্দ্র মোদির জয়ের পিছনেও তার অবদান রয়েছে।
তারই অক্লান্ত পরিশ্রমের সুস্বাদু ফল এখন গোগ্রাসে গিলছে গেরুয়া শিবির। কিন্তু একার অবদান মানতে নারাজ সুনীল। বলছেন, ‘দলের অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের সম্মিলিত প্রয়াস ও নিচুতলার কর্মীদের পরিশ্রমই ফল দিয়েছে।’
২০০৫ সালে আরএসএস থেকে বিজেপিতে পদার্পণ। তারপর থেকে নাওয়া-খাওয়া ভুলে দলের একনিষ্ঠ সৈনিক হয়ে গিয়েছেন। নিজের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মাই হোম ইন্ডিয়ার হয়ে তিনি অনাথ শিশুদের জন্য কাজ করার পাশাপাশি দলটাও মন দিয়ে করেন। আগে সংঘের প্রচারক হিসাবে মেঘালয়সহ উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলিতে যাতায়াত ছিল সুনীলের।
১৯৯০ থেকে প্রায় আট বছর মেঘালয়ে পড়েছিলেন সংঘের প্রচারের কাজে। কিন্তু বামদুর্গ ত্রিপুরা ছিল শক্ত ঘাঁটি। দুর্জয় সেই ত্রিপুরায় পদ্মফুল ফোটানোর জন্য অমিত শাহ তার উপরই ভরসা রেখেছিলেন। যখন ত্রিপুরার দায়িত্ব পান তখন সরকার-রাজে ফাটল ধরানো ছিল একপ্রকার অসম্ভব ব্যাপার। ২০১৩ সালে বিধানসভা ভোটে ৫০ জনের মধ্যে ৪৯ জন বিজেপি প্রার্থীর জমানত জব্দ হয়েছিল। মাত্র ১.৫ শতাংশ ভোট।
এই পরিস্থিতিতে সংগঠনকে চাঙ্গা করে ফের ভোটের ময়দানে নামা ছিল ডেভিড বনাম গোলিয়াথের লড়াই। কিন্তু হাল ছাড়েননি দেওধর। প্রতি মাসে অন্তত ১৫ দিন এই রাজ্যে কাটাতেন। শিখেছিলেন স্থানীয় কোকবোরকদের ভাষা। রাজ্যের জনসংখ্যার ৩১ শতাংশ এই আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষই।
ভাষা শিখেই বাজিমাত করেছেন সুনীল। আদিবাসী ভোট টানতে সফল হয়েছে বিজেপি। ত্রিপুরায় তফসিলি উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত ২০টি আসনেই জয়লাভ করেছে বিজেপি। সুনীল জানিয়েছেন, ওই আসনগুলি দলের প্রধান লক্ষ্য ছিল। পাশাপাশি রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং মহিলাদের উন্নয়নে কাজ করবে দল।
এমটিনিউজ/এসএস