বেসামরিক লোকদের ওপর রাসায়নিক হামলা চালিয়েছে সিরিয়া- এমন অভিযোগে শনিবার ভোরে দেশটির অন্তত তিন শহরে হামলা চালিয়েছে আমেরিকা, ব্রিটেন ও ফ্রান্স। রাজধানী দামেস্ক, হোমস ও হামা শহরে সিরিয়া সরকারের সামরিক তথা রাসায়নিক অস্ত্রের স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
সিরিয়া সরকার বলছে, ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। আর হামলার ব্যাপারে রাশিয়া সতর্ক করায় তারা আগেই সংশ্লিষ্ট স্থাপনা খালি করে, ফলে অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি ছাড়া হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। মার্কিন প্রশাসন বলছে, ১০০টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করা হয়েছে।
সিরিয়ার পার্শ্ববর্তী দেশ তুরস্ক এ হামলাকে স্বাগত জানিয়েছে। শনিবার তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে একে ‘উপযুক্ত জবাব’ বলে অভিহিত করেছে।
ওই বিবৃতির বরাত দিয়ে তুর্কি সরকারি গণমাধ্যম আনাদলু এজেন্সি বলেছে, ‘দুমায় সাধারণ মানুষের ওপর রাসায়নিক হামলার প্রেক্ষাপটে এই অভিযানকে আমরা স্বাগত জানাই।’
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে শেষ দিকে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের পার্শ্ববর্তী দুমায় রাসায়নিক (বিষাক্ত গ্যাস) হামলা চালালে বেশ কিছু লোক মারা যায়। সিরিয়ার সরকারই এ হামলা চালিয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। সাত বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধে এর আগেও কয়েকবার রাসায়নিক হামলার অভিযোগ উঠে সিরিয়া সরকারের বিরুদ্ধে। কিন্তু সব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে দামেস্ক।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বেসামরিক লোকদের ওপর নির্বিচারে রাসায়নিক অস্ত্রসহ গণবিধ্বংসী অস্ত্রের ব্যবহার মানবতাবিরোধী অপরাধ। সিরিয়া সরকার বিগত সাত বছরের বেশি সময় ধরে নিজ জনগণের ওপর নিপীড়ন চালিয়ে সে অপরাধের প্রমাণ দিয়েছে। সচেতন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, এ ধরনের অপরাধ শাস্তিহীন হতে পারে না এবং পরবর্তীতে যাতে একই ধরনের অপরাধ না হয় সেজন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা দরকার।
রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করে কেউ যাতে পার পেয়ে না যায় সেজন্য যৌথ উদ্যোগ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে আঙ্কারা।
উল্লেখ্য, শুক্রবার দিন শেষে হোয়াইট হাউজে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়ার সামরিক তথা রাসায়নিক অস্ত্র উৎপাদন ও সরবরাহ সংক্রান্ত স্থাপনায় হামলা চালানোর নির্দেশ দেন। এরপর শনিবার ভোররাতে একযোগে হামলা চালায় তিন দেশ।
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি