আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আবারো আকাশে ডানা মেলতে যাচ্ছে সুপারসনিক যাত্রীবাহী বিমান কনকর্ড। এরইমধ্যে ব্রিটেনের একদল কনকর্ড অনুরাগী এজন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করেছেন। ফলে ২০১৯ সালের মধ্যে অত্যন্ত ব্যয়বহুল বিমানটিকে আকাশে ওড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।
‘ক্লাব কনকর্ড’ নামে অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন, বিমান সংগ্রহকারী ও শৌখিন বৈমানিকদের গ্রুপটি জানিয়েছে, তারা এখন পর্যন্ত ১২০ মিলিয়ন পাউন্ড সংগ্রহ করেছেন। আকাশে উড়ানোর পাশাপাশি এই সুপারসনিক বিমানের একটি লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে প্রদর্শনীর জন্য রেখে দেয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
সর্বশেষ ২০০৩ সালে আকাশে উড়েছিল কনকর্ড। অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ায় যাত্রী সংকটে ভুগছিল বিমান পরিচালনাকারী সংস্থাগুলো। এটিই ছিল একমাত্র যাত্রীবাহী বিমান যা শব্দের চেয়ে দ্বিগুণ গতিতে উড়তে পারতো।
ক্লাব কনকর্ডের প্রেসিডেন্ট পল জেমস বলেছেন, অন্তত দুটি কনকর্ড কেনা অথবা লিজ নেয়ার জন্য কথাবার্তা চলছে।
ফ্রান্সের কাছ থেকে এই বিমানগুলো কেনার কথা জানান তিনি। ২০১৯ সালে কনকর্ডের প্রথম উড্ডয়নের ৫০ বছর পূর্তি হবে।
৭০’-এর দশকে প্রথম আকাশে ওড়ে কনকর্ড। ফ্রান্সের তুলুজ থেকে ওড়ে সেটি। একদা ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ এবং এয়ার ফ্রান্সের চোখের মণি ছিল এই বিশাল যাত্রিবাহী বিমান। শব্দের চেয়েও দু’গুণ জোরে চলত সে।
কিন্তু হঠাত্ই ছন্দপতন। ২০০০ সালে ভেঙে পড়ে এয়ার ফ্রান্সের একটি যাত্রিবাহী কনকর্ড। ওড়ার কিছু ক্ষণ পরই প্যারিসে ভেঙে পড়ে নিউইয়র্কগামী বিমানটি। মৃত্যু হয় ১১৩ জনের। এই দুর্ঘটনার পরই ২০০৩ সালে তুলে নেওয়া হয় প্রত্যেকটি কনকর্ডকে।
এর পর কেটে গিয়েছে প্রায় এক যুগ। কনকর্ড ফেরাতে উদ্যোগী হন এক দল উত্সাহী। কেউ বা তাঁরা প্রাক্তন বিমান চালক। কেউ বা আবার নিছকই কনকর্ডকে ভালবেসে এগিয়ে আসেন। একে একে জড়ো হন তাঁরা। এই ভাবেই পথ চলতে শুরু করে ‘ক্লাব কনকর্ড’।
ক্লাবের সভাপতি পল জেমস জানিয়েছেন, “কনকর্ডকে ফেরানোর ক্ষেত্রে প্রধান বাধা ছিল অর্থ। কিন্তু আমরা অভিভুত এত মানুষের উত্সাহে। সংস্থার হাতে উঠে এসেছে প্রায় ১২ কোটি পাউন্ড।” এই অর্থ দিয়ে একটি বা দু’টি বিমান কেনা অথবা লিজ নেওয়ার কথা ভাবছেন তাঁরা।
এই প্রচেষ্টা সফল হলে ২০১৯ সালেই ফের উড়তে দেখা যাবে নজির সৃষ্টিকারী বিমানকে। ২০১৯ সালই আবার কনকর্ডের যাত্রা শুরুর গোল্ডেন জুবিলি। এ ছাড়াও লন্ডন আইয়ের কাছে টেমসের উপর দ্বিতল একটি প্লাটফর্মে কনকর্ডকে ডিসপ্লে করে রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এর জন্য প্রায় ৪ কোটি পাউন্ড খরচ করা হবে এই প্রকল্পে। ভবিষ্যতে একটি কনকর্ড বিমানকে সারিয়ে চার্টার্ড বিমান হিসেবে ব্যবহার করারও পরিকল্পনা আছে উদ্যোগতাদের। সূত্র: বিবিসি
২০ সেপ্টেস্বর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস