শনিবার, ১০ মে, ২০২৫, ১০:০৪:৪২

পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে বিরাট এক ক্ষতি হয়ে গেল ভারতের!

পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে বিরাট এক ক্ষতি হয়ে গেল ভারতের!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলা ঘিরে বেশ ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ একটা সময় পার করল ভারত-পাকিস্তান। চিরশত্রুভাবাপন্ন দুই দেশের মধ্যে গত ১৯ দিন ধরে চলা উত্তেজনা প্রায় যুদ্ধের রূপ ধারণ করেছিল শেষ তিন দিনে। পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অস্থির করে তুলেছিল পরিস্থিতি।

শনিবার (১০ মে) বিকেলে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার আগ পর্যন্ত চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় সময় কেটেছে বিনিয়োগকারীদের, যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে শেয়ারবাজারে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানের সঙ্গে আসন্ন সর্বাত্মক যুদ্ধের শঙ্কায় মাত্র দুই দিনেই প্রায় ৮৩ বিলিয়ন (৮ হাজার ৩০০ কোটি) ডলার খুইয়েছে ভারতের শেয়ারবাজার। খবর রয়টার্সের। 

ব্রিটিশ বার্তাসংস্থাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, আজ শনিবার (১০ মে) পর্যন্ত দরপতন জারি ছিল ভারতীয় শেয়ারবাজারে। এর মধ্যে শুধু বৃহস্পতিবার (৮ মে) ও শুক্রবার (৯ মে)—এই দুই দিনেই প্রায় ৮৩ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে। 

গত মাসে জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার জবাবে গত বুধবার পাকিস্তানে হামলা চালায় ভারত। এরপর পাকিস্তান পাল্টা জবাব দেয় এবং দুই দেশের মধ্যে সীমান্তে গোলাগুলির লড়াই চলতে থাকে।

এই উত্তেজনার প্রেক্ষিতে এনএসইর নিফটি ৫০ সূচক শুক্রবার ১ দশমিক ১ শতাংশ কমে গেলেও মনস্তাত্ত্বিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ২৪ হাজার পয়েন্টের ওপরে বন্ধ হয়। অন্যদিকে বিএসই সেনসেক্স সূচকও ১ দশমিক ১ শতাংশ হ্রাস পায় এবং আগের দিনের ৮০ হাজারের নিচে নেমে যায়।

সবচেয়ে বাজে সময়টুকুতে ভারতীয় শেয়ারবাজারের ক্ষতি ১০৮ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত পৌঁছায়। গত বৃহস্পতিবার সূচক কমে প্রায় দশ দশমিক ৫ শতাংশ এবং পুরো সপ্তাহে নিফটি ও সেনসেক্স মিলে ১ দশমিক ৩ শতাংশের মতো পতন ঘটায়, যা চলতি বছরের সবচেয়ে দীর্ঘ তিন সপ্তাহের ঊর্ধ্বগতির ধারাকে ছিন্ন করেছে।

প্রফিটমার্ট সিকিউরিটিজের গবেষণা প্রধান অবিনাশ গোরাক্ষকর বলেন, উত্তেজনার মধ্যে বিনিয়োগকারীরা উদ্বিগ্ন। কারণ পাকিস্তান যদি আরও পাল্টা হামলা চালায়, তাহলে তা দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে পরিণত হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, যুদ্ধে মনোযোগ থাকার কারণে মৌলিক বিষয়গুলো পেছনে পড়ে যাচ্ছে। আর এই উত্তেজনার সংবাদ বাজারের গতি কমপক্ষে এক সপ্তাহের জন্য ব্যাহত করতে পারে।

শুধু শেয়ারবাজার নয়, অন্যান্য সম্পদ শ্রেণিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভারতের। ভারতীয় রুপির পতন ঠেকাতে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। ছোট এবং মাঝারি কোম্পানির শেয়ার যথাক্রমে ১ দশমিক ৯ ও ০ দশমিক ৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

তবে, সব সেক্টরের মধ্যে স্বস্তির জায়গা ছিল গাড়িনির্মাতা খাতে। যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য চুক্তির আশায় টাটা মোটরসের শেয়ার ৮ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে, যা তার ব্রিটিশ ইউনিট জেএলআরের ব্যবসা বাড়াতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। নিফটি ৫০-এর ১১টি বাড়তি শেয়ারের মধ্যে এটি ছিল সবার ওপরে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে