বৃহস্পতিবার, ০৩ মে, ২০১৮, ০৯:০১:১৭

এবার ৫০ ডিগ্রিতে পুড়ছে পাকিস্তান!

এবার ৫০ ডিগ্রিতে পুড়ছে পাকিস্তান!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: এত গরম আগে দেখেনি বিশ্বের কোনও দেশ। এপ্রিল মাসেই পাকিস্তানে পারদ ছুঁল ৫০ ডিগ্রি। বিশ্বের ইতিহাসে আর কোনোদিন এত গরম দেখা যায়নি। দক্ষিণ পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের নবাবশা শহরে গত সোমবার তাপমাত্রা ছিল ৫০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ঘটনাটি প্রথম নজরে নিয়ে আসেন ফরাসি আবহবিদ ইতিএনে কাপিকিয়ান। তিনি বলেন, ‘‌এপ্রিলে এর আগে কখনও এত গরম পড়েনি। গোটা এশিয়াতে এটা রেকর্ড।’

এর আগে গত মার্চ মাসেও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার দিক থেকে রেকর্ড গড়েছিল পাকিস্তানের এই শহরটি।

গত মাসে শহরের উষ্ণতা ছাড়িয়েছিল ৪৫‌ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়াবিদ ক্রিস্টোফার বার্ট জানান, ‘‌২০১১ সালের এপ্রিল মাসে মেক্সিকোর সান্তা রোজাতে তাপমাত্রা ছিল ৫১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে সে ব্যাপারে তেমন কোনও নির্দিষ্ট তথ্য নেই। তাই এটাই এপ্রিল মাসে পৃথিবীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হতে পারে।’

স্বাভাবিকভাবেই এই অবস্থায় বিপাকে পড়েছে সেখানকার সাধারণ মানুষ। রাস্তাঘাটে কোনও লোক নেই। সবাই কার্যত গৃহবন্দি। হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে শহর জুড়ে।

বিজ্ঞানীদের মতে, মানুষের কারণেই জলবায়ু পরিবর্তন ও বিশ্ব উষ্ণায়ন হচ্ছে। আর তাই এভাবে তাপমাত্রা বেড়ে চলেছে। যার ফলে ২১০০ সালের মধ্যেই এই অঞ্চলের কোটি কোটি মানুষ মারা যাবে বলে হুঁশিয়ারি জারি করেছেন বিজ্ঞানীরা।

৪ আগস্ট ২০১৭ তারিখে,‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’ সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন ৮০ বছর পর দক্ষিণ এশিয়ায় যে গরম পড়বে তা মানুষের বেঁচে থাকার সহ্যসীমা অতিক্রম করতে পারে। তাতে লাখ লাখ মানুষ মারা যেতে পারে কিংবা এলাকাছাড়া হতে পারে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ার সঙ্গে ওই সময় আর্দ্রতার মাত্রা বেড়ে এমনটা ঘটবে।

ওই সময় সারা বিশ্বেই এই পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও দক্ষিণ এশিয়ার ৩০ শতাংশ মানুষের জন্য এ হুমকি প্রবল। বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারতের উত্তরাঞ্চল ও পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ এই ঝুঁকির মধ্যে থাকবে।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, কার্বন নিঃসরণের হার না কমানো হলে দক্ষিণ এশিয়ার অধিকাংশ অঞ্চলে ওয়েট বাল্ব তাপমাত্রার সীমা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যেতে পারে। বিশেষ করে গঙ্গা অববাহিকা, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, বাংলাদেশ, চীনের পূর্ব উপকূল, শ্রীলঙ্কার উত্তরাঞ্চল এবং পাকিস্তানের সিন্ধু অববাহিকায় ওয়েট বাল্বে তাপমাত্রার সীমা চরমে পৌঁছতে পারে।

বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এই আশঙ্কা দূর করতে হলে প্যারিস জলাবায়ু চুক্তি মেনে চলতে হবে, যাতে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির পরিমাণ ২ ডিগ্রির নিচে রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে