শুক্রবার, ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১১:০৩:৫৪

স্ত্রীর সঙ্গে শালির বরের সম্পর্ক, স্কুলে শ্বশুর-শাশুড়ির হানা, আত্মঘাতী শিক্ষক

স্ত্রীর সঙ্গে শালির বরের সম্পর্ক, স্কুলে শ্বশুর-শাশুড়ির হানা, আত্মঘাতী শিক্ষক

আশিস মণ্ডল, বীরভূম: পাঁচটি টুকরো কাগজে তিনি স্ত্রী সহ শ্বশুর, শাশুড়ি, শ্যালিকা এবং ভায়রাভাইয়ের অত্যাচারে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন। এমনকী তাঁর মৃত্যুর পর চাকরি যেন স্ত্রীকে না দেওয়া হয়, সে কথাও লিখে গিয়েছেন।

এক দিকে স্ত্রীর সঙ্গে ভায়রাভাইয়ের অবৈধ সম্পর্ক, অন্য দিকে স্কুলে ঢুকে শ্বশুর-শাশুড়ির হেনস্থা সহ্য করতে না পারা। এই দুইয়ের জেরে আত্মঘাতী হলেন শিক্ষক। মৃত্যুর আগে তাঁর প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা স্কুল কর্তৃপক্ষকে দান করার কথা লিখে গিয়েছেন। ঘটনাটি বীরভূমের রামপুরহাটের আয়াস গ্রামের।

মৃত শিক্ষক বছর ৩৬-এর ইসরাফিল পটুয়া থাকতেন রামপুরহাটে। ১৫ বছর আগে মুর্শিদাবাদের খড়গ্রাম থানার আয়রা গ্রামে বেবি পটুয়াকে তিনি বিয়ে করেন।

তাঁদের দুই ছেলে-মেয়ে। গ্রাম সংলগ্ন লম্বদরপুর হাইস্কুলে তিনি শিক্ষকতা করতেন। ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার জন্য কয়েক বছর আগেই রামপুরহাটে ঘর ভাড়া নেন। একই পাড়ায় বিয়ে করে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেন মৃত শিক্ষকের শ্যালিকা বুড়ি পটুয়া। তাঁর স্বামী জহর পটুয়া রামপুরহাট পোস্ট অফিসের কর্মী। তাঁদের বাড়ি মুর্শিদাবাদের ঝিল্লি গ্রামে হলেও তাঁরা রামপুরহাটের সানঘাটাপাড়ায় বাড়ি নির্মাণ করে স্থায়ী বসবাস শুরু করেন।

সেই সূত্রে দুই বাড়ির মধ্যে যাতায়াত ছিল। এরই মধ্যে বেবির সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন জহর। এ নিয়ে ইসরাফিলের পরিবারে চরম অশান্তি শুরু হয়।

দিন সাতেক আগে জহর বাড়িতে ঢুকে লোহার তালা দিয়ে ইসরাফিলের মাথায় আঘাত করে বলে মৃত্যুর আগে লিখে গিয়েছেন ইসরাফিল নিজেই। চিঠিতে আরও লিখেছেন, ৫ সেপ্টেম্বর স্কুলে শিক্ষক দিবস অনুষ্ঠান চলাকালীন শ্বশুর ফকির পটুয়া, শাশুড়ি জরিফা পটুয়া, ভায়রাভাই জহর পটুয়া, শ্যালিকা বুড়ি পটুয়া এবং স্ত্রী স্কুলে ঢুকে তাঁকে হেনস্থা করেন।

ওই দিন রামপুরহাটের বাড়িতে না ফিরে তিনি গ্রামের বাড়িতে যান। সেখানেই পাঁচটি টুকরো কাগজে তিনি স্ত্রী সহ শ্বশুর, শাশুড়ি, শ্যালিকা এবং ভায়রাভাইয়ের অত্যাচারে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন। এমনকী তাঁর মৃত্যুর পর চাকরি যেন স্ত্রীকে না দেওয়া হয়, সে কথাও লিখে গিয়েছেন। জানিয়ে গিয়েছেন, তাঁর মৃত্যুর পর প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা যেন স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে দেওয়া হয়। মৃত্যুর জন্য পাঁচ জনকেই দায়ী করলেও অন্য একটি কাগজে লিখেছেন, দুই ছেলে-মেয়েকে দেখাশোনার জন্য তাঁর স্ত্রীকে যেন ছেড়ে দেওয়া হয়।-এবেলা

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে