আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এইমাত্র পাওয়া খবর, বড় সাফল্য পেয়ে গেলেন ভারতীয় সেনারা, কাশ্মিরে জঙ্গি হামলার মাস্টারমাইন্ডকে হত্যা করতে পেরেছেন তারা।চারদিনের মধ্যেই বড় সাফল্য পেল ভারতীয় সেনা। রবিবার রাতে পুলওয়ামায় সেনা তল্লাশির সময় হামলা চালায় জইশ গোষ্ঠীর জঙ্গিরা। সেনা ও জঙ্গি সংঘর্ষে নিহত হন এক মেজর-সহ চার জন জওয়ান। গুলির লড়াইয়ে নিহত পুলওয়ামা কাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড কামরান। নিহত অপর এক মাস্টারমাইন্ড গাজিও। ধ্বংস করা হল জঙ্গি ঘাঁটিও। মৃত্যু হয়েছে অপর এক জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গিরও।-আনন্দবাজার পত্রিকা
গুলির লড়াইয়ে প্রাণ হারান এক সাধারণ নাগরিক। গুরুতর আহত এক স্থানীয় বাসিন্দা-সহ আরও কয়েক জন জওয়ান। পিংলান গ্রামে একটি বাড়িতে বেশ কয়েক জন জঙ্গি লুকিয়ে রয়েছে বলে খবর পেয়ে রবিবার গভীর রাতে বাড়ি ঘিরে ফেলে সেনা। বাড়ির মধ্যে জইশ জঙ্গিদের বাড়িটি ঘিরে ফেলেছিল সেনাবাহিনী। এই জঙ্গিদের মধ্যে ছিল জইশ কমান্ডার কামরান ও গাজি। গুলির লড়াই এখনও চলছে।
এই কামরানই অবন্তীপোরায় সেনা কনভয়ে আইইডি হামলার মূল চক্রী, এমনটাই নিশ্চিত করেছে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ।বৃহস্পতিবারের হামলার পর নিয়মিত সেনা তল্লাশি চলার সময় সেনাদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে জঙ্গিরা। এই হামলার নেতৃত্বে ছিল কামরানই। দীর্ঘক্ষণ প্রত্যাঘাত করে সেনাবাহিনীও। যে ভাবে সেনা ঘিরে রেখেছিল কামরান ও তার সঙ্গীদের। সেখান থেকে কামরানের বেঁচে ফেরা অসম্ভব ছিল, এমনটাও জানিয়েছে পুলিশ সূত্র।
সেনা সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবারের আত্মঘাতী হামলার ৬ থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে পিংলানে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। জঙ্গিদের সঙ্গে গুলি বিনিময়ের ফলে প্রাণ হারিয়েছেন মেজর-সহ চার জওয়ান। গুলির লড়াইয়ের মাঝে পড়ে নিহত হয়েছেন এক স্থানীয় বাসিন্দাও। সকাল ৯টা পর্যন্ত সেনা ও জঙ্গিদের মধ্যে গুলি বিনিময় চলছে।
যৌথ অভিযানে কামরানের সঙ্গে রয়েছে পুলওয়ামা হামলার সঙ্গে জড়িত আরও কয়েকজন জঙ্গি। সিআরপিএফ ও রাজ্য পুলিশ রবিবার রাত ১২.৫০ মিনিট থেকে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছিল। জইশ কমান্ডার কামরান লুকিয়ে রয়েছে এ খবর পেয়েই ঘিরে ফেলা হয়েছিল পুলওয়ামার গ্রামের ওই বাড়িটি।
পিংলান এলাকায় রবিবার গভীর রাত থেকেই সেনা ও জঙ্গিদের মধ্যে গুলি বিনিময় শুরু হয়। ঘটনায় আহত জওয়ানদের শ্রীনগরের সেনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন মেজর ডি এস দোন্ডিয়াল, হেড কনস্টেবল সেভ রাম, অজয় কুমার ও হরি সিং।
বৃহস্পতিবার অবন্তীপোরায় হামলায় পর সিআরপিএফ সূত্রে জানানো হয়েছিল, ওই এলাকায় নিরাপত্তা দ্বিগুণ করে দেওয়া হয়েছে। কনভয়ের গতিতেও পরিবর্তন আনার কথা জানিয়েছিলেন সিআরপিএফের ডিজি রাজীব ভাটনগর।
তিনি বলেন, ‘‘যান নিয়ন্ত্রণকে বাদ দিলে কনভয়েরও সময়েও পরিবর্তন করার কথা হয়েছে। কনভয় থামা ও বাকি গতিবিধিও নিরাপত্তাবাহিনী ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের সঙ্গে সংযোগ বজায় রেখেই করা হচ্ছে।’’
পুলওয়ামা হামলার পরই নরেন্দ্র মোদী হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, এর প্রত্যুত্তর দেবেই ভারত। সেনাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে কোথায়, কখন, কী ভাবে প্রত্যাঘাত করা হবে এমনটাও বলেছিলেন তিনি। এর পরেও একই এলাকায় জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষে জওয়ানদের নিহত হওয়ার ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে নিরাপত্তা।
পুলওয়ামায় হামলার পর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দাবি করা হয়েছে ‘বদলা চাই’। ইতিমধ্যেই ভারত পাকিস্তানকে কূটনৈতিক এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যেক্ষেত্রে চাপ সৃষ্টি করা শুরু করে দিয়েছে।