আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কাশ্মিরের হামলার জেরে ভারতের সম্ভাব্য হামলা আঁচ পেয়ে শেষমেশ জাতিসংঘের দ্বারস্থ হলো পাকিস্তান। বলল, ‘ভারত আক্রমণ করতে পারে, আপনারা থামান’। ভারতীয় উপমহাদেশে শান্তি ফেরাতে চাইল জাতিসংঘের মধ্যস্থতা।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি চিঠি দিলেন জাতিসংঘের সেক্রেটারি-জেনারেল আন্তোনিও গুয়েতেরেসকে। আর্জি জানালেন সেই চিঠি জাতিসংঘের সাধারণ ও নিরাপত্তা পরিষদের সবক’টি দেশের হাতে তুলে দিতে।
তা নিয়ে আলোচনা করতে ও দ্রুত ব্যবস্থা নিতে। কাশ্মীর নিয়ে ভারত অবশ্য বরাবরই তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতার বিরোধিতা করে এসেছে। এখনও তার বিরোধী।
জাতিসংঘের সেক্রেটারি-জেনারেলকে চিঠিতে মঙ্গলবার পাক মন্ত্রী কুরেশি লিখেছেন, ‘পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক শক্তি ব্যবহারের যে হুমকি দিয়েছে ভারত, তার প্রেক্ষিতে এই অঞ্চলে শান্তি পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। ফলে, আমরা জরুরি ভিত্তিতে আপনাদের (জাতিসংঘ) হস্তক্ষেপের প্রয়োজন বোধ করছি। তাই আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় গত ১৪ ফেব্রুয়ারি আত্মঘাতী জঙ্গি হানায় সিআরপিএফ-এর ৪৯ জন জওয়ান প্রাণ হারান। ওই ঘটনার পর পরই তার দায় স্বীকার করে পাকিস্তানে ঘাঁটি গেড়ে থাকা সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ‘জইশ-ই-মোহাম্মদ’।
পুলওয়ামা কান্ডের প্রেক্ষিতে সর্বদলীয় বৈঠকের পর সেনাবাহিনীকে তার পূর্ণ ক্ষমতা প্রয়োগের অনুমতি দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জাতিসংঘের সেক্রেটারি-জেনারেলকে লেখা পাক মন্ত্রীর চিঠি তারই প্রেক্ষিতে।
পাক মন্ত্রী কুরেশি তার চিঠিতে লিখেছেন, ‘যতই ঢাকা-চাপা দেওয়ার চেষ্টা হোক, পুলওয়ামায় ভারতের সিআরপিএফ জওয়ানদের উপর হামলা চালিয়েছে কাশ্মীরের এক বাসিন্দাই। ওই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত না করে পাকিস্তানকে আক্রমণ করাটা আদৌ উচিত নয়।’
ওই ঘটনায় জঙ্গিদের পিছনে পাকিস্তানের মদত রয়েছে বলে ভারতের তরফে যে অভিযোগ করা হয়েছে, জাতিসংঘের সেক্রেটারি-জেনারেলকে লেখা চিঠিতে তাকে ‘অবাস্তব’ বলে উল্লেখ করেছেন পাক বিদেশমন্ত্রী।
মোদি সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্বেষকে যে ঘরোয়া রাজনীতিতে ব্যবহার করছেন, আগামী দিনেও সেটা করে যেতে চাইছেন, চিঠিতে তারও উল্লেখ করেছেন কুরেশি।
পাক মন্ত্রী লিখেছেন, ‘ভারত ইচ্ছাকৃত ভাবেই পাক-বিদ্বেষকে জিইয়ে রেখে ঘরোয়া রাজনীতিতে তার ফসল তুলতে চাইছে। তাই পাকিস্তানের সঙ্গে শত্রুতা করছে। এই অঞ্চলে অশান্তির পরিবেশ, উত্তেজনা সৃষ্টি করছে।’
দিল্লি ইতিমধ্যেই সিন্ধু নদীর জলবণ্টন চুক্তিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করার ইঙ্গিত দিয়েছে, জাতিসংঘের সেক্রেটারি-জেনারেলকে সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে পাক মন্ত্রী লিখেছেন, ‘দ্রুত শান্তি ফিরিয়ে আনার প্রয়োজন দেখা গিয়েছে। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপুঞ্জের আশু পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি।’
কুরেশির আরও আর্জি, চাইলে, জাতিসংঘ এ ব্যাপারে ভারতকে অনুরোধ করতে পারে। পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনায় বসে ভারতকে বিরোধ মিটিয়ে নিতে বলতে পারে।