আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সীমানা পেরিয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে ভারত। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৩টায় এই ঘটনাটি ঘটেছে। জানা গেছে, ১২ টি যুদ্ধবিমান ‘মিরাজ ২০০০’(Air Strike) এই অপারেশনে অংশ নেয়। ভারত বলছে, এই অভিযানে ২০০-৩০০ জঙ্গি নিহত হয়েছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে চারটি বিষয়কে মাথায় রেখেই এ ধরনের আঘাত হানে ভারতীয় সেনা। এই ৪টি বিষয় হলো- ১. টার্গেটিং, ২. টাইমিং, ৩. লিডারশিপ, ৪. কারেজ(সাহস)।
টার্গেটিং
টার্গেটের নীল নকশা খুব ভালভাবে সাজাতে হয়। খুব সূক্ষ্ণতার সঙ্গে টার্গেটকে স্থির করতে হয়। টার্গেট সম্বন্ধে আগে থেকে সমস্ত তথ্য নিখুঁতভাবে জোগাড় করতে হয়। শুধু টিম লিডার নয়, দলের সকলকে সেই তথ্য খুব খুঁটিয়ে জানতে হয়। আঘাত হানার আগের ২৮ বা ৪৮ ঘণ্টা ধরে টার্গেটকে সবসময় পর্যবেক্ষণে রাখতে হয়। এই প্রত্যেকটা কাজ খুব ভাল করে না হলে লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
টাইমিং
ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এই টাইমিং। পুরো অপারেশন শেষ করে নিরাপদ স্থানে ফিরে আসার একটা নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকে। সেই সময়কে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে মেনে চলতে হয়। এক চুল সময় নষ্ট হলেও শত্রুপক্ষের হাতে ধরা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। যেকোনো একজন পাইলটও যদি সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারে, যখন গোটা টিমটাই নিজেদের মনোবল হারিয়ে ফেলে।
লিডারশিপ
পাইলটের দায়িত্ব সবার আগে। তিনিই গোটা দলকে নেতৃত্ব দেবেন। পুরো অপারেশন সফলভাবে শেষ করার আগে পর্যন্ত তিনিই গোটা কর্মকাণ্ডের জন্য দায়বদ্ধ থাকবেন। পাইলট যখন অপারেশন চালান, তখন টিমের অন্যদের কর্তব্য পাইলটকে রক্ষা করা। এই কাজ অত্যন্ত সফলভাবে হয়েছে বলেই আজকের এই হানায় কোনওরকম হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
সাহস
সাহস ছাড়া এমন দুঃসাহসিক কাজে নামা সম্ভব নয়। খোদ শত্রু শিবিরে ঢুকে গিয়ে এমন অভিযান চালানো মুকের কথা নয়। অপারেশন শুরুর আগে সেই মানসিক প্রস্তুতিও নিতে হয়। নিজেকে তৈরি করে নিতেই হয়। কারণ আবার ফিরে আসা আদৌ সম্ভব হবে কি না তা কেউ জানে না।
এদিকে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মীরের পুলওয়ামায় ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলায় ভারতের সিআরপিএফের কমপক্ষে ৪০ সেনা নিহত হয়েছেন। ওই হামলার পরপরই এর দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী জয়েশ-ই-মোহাম্মদ। এরপর থেকেই ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সংঘাত চরমে উঠেছে।
দু’দেশের মধ্যে এতদিন পর্যন্ত বাকবিতণ্ডা চলছিল। এবার ভারতের এয়ার স্ট্রাইকের ঘটনায় দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।