সোমবার, ১৮ মার্চ, ২০১৯, ০৪:৪৬:৪১

ছেলেকে বাঁচাতে বন্দুকের সামনে বুক পেতে দিয়েছিলেন জুলফিকার

ছেলেকে বাঁচাতে বন্দুকের সামনে বুক পেতে দিয়েছিলেন জুলফিকার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে হামলার ঘটনায় নির্মমতার পাশাপাশি প্রকাশ পাচ্ছে বীরত্ব ও মমত্ববোধের কাহিনী। আল নুর ও লিনউডে মসজিদে শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসীর বর্বরোচিত হামলার মুখে অনেকেই প্রাণের পরোয়া না করে অন্যদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। 

পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের নাগরিকরা নিহত হয়েছেন অন্যদের বাঁচাতে গিয়ে। সন্তানকে বাঁচাতে গিয়ে সন্ত্রাসীর বন্দুকের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন জুলফিকার সিয়াহ। দুই বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে সেদিন তিনি জুমার নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন লিনউড মসজিদে।

সেখানে দুপুর ২টার আগমুহূর্তে নামাজরত মুসল্লিদের ওপর বন্দুক হামলা চালায় সন্ত্রাসী ব্রেনটন ট্যারেন্ট। তার কিছু সময় আগেই পার্শ্ববর্তী আল নুর মসজিদে ৪২ জনকে হত্যা করে সে।

ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট জানায়, ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে বুলেটবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন জুলফিকার। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে তার চিকিৎসা চলছে।

সিয়াহর মার্কিন স্ত্রী আল্টা মারি জানান, তাদের ছেলে আভেরোস সামান্য আহত হলেও সে সুস্থ হয়ে উঠছে। তবে স্বামীর শরীরে বেশ কয়েক জায়গায় গুলি লেগেছে।

এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেন, “লিনউড ইসলামিক সেন্টারে হামলার সময় আভেরোসকে আড়াল করেছিল সে। এতে ট্যারেন্টের ছোড়া অধিকাংশ গুলিই লাগে তার শরীরে। এতে সে আমাদের ছেলের চেয়ে অনেক বেশি আহত হয়।”

জানা গেছে, মাত্র দুই মাস আাগে ইন্দোনেশিয়া থেকে নিউজিল্যান্ডে যায় জুলফিকারের পরিবার। এ দম্পতির এক বন্ধু জানান, জুলফিকার একজন একজন ‘মেধাবী ও কঠোর পরিশ্রমী আর্টিস্ট’।

শুক্রবার জুমার নামাজের সময় ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদসহ দুটি মসজিদে এই শ্বেতাঙ্গ খ্রিস্টানের গুলিতে কয়েকজন বাংলাদেশিসহ কমপক্ষে ৫০ জন নিহত হন। আহত হন আরও ৪৬ জন যাদের ১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

ক্রাইস্টচার্চের ডিনস অ্যাভিনিউর আল নুর মসজিদ ও পার্শ্ববর্তী লিনউডের মসজিদে হামলা চালায় ব্রেনটন ট্যারেন্ট নামের শ্বেতাঙ্গ খ্রিস্টান সন্ত্রাসী। স্ট্রিকল্যান্ড স্ট্রিটে একটি গাড়িবোমা হামলার চেষ্টার ঘটনাও ঘটেছে।

ক্রাইস্টচার্চে হেগলি ওভাল মাঠের খুব কাছের আল নুর মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের ওপর বন্দুক হামলার ঘটনায় অল্পের জন্য রক্ষা পান বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়েরা। তখন তাদের সঙ্গে কোনো নিরাপত্তারক্ষী ছিল না।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে