মার্কিন ভিসা চাইলে ফেসবুক-টুইটার থেকে সাবধান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ব্যবসা, পড়াশোনা, চাকরি, ভ্রমণ বা অন্য যে কোনও কাজের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেতে চান? তা হলে ফেসবুক, টুইটার বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে আপনি কী লিখছেন বা কী শেয়ার অথবা পোস্ট করছেন, সে ব্যাপারে একটু 'সাবধান' থাকতে হবে! কারণ, ভিসা আবেদনকারীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় কী-কী কার্যকলাপ করে থাকেন, এখন থেকে সেই বিষয়গুলোই খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে দেখবে মার্কিন নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলি৷ সেখানে সব 'ঠিকঠাক' থাকলে তবেই ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। চরমপন্থী বা সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা যাতে মার্কিন মাটিতে ঢুকতে না-পারে, সেই উদ্দেশ্যেই এই ব্যবস্থা নিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ তবে এ বিষয়টি নিয়ে অনেক বিতর্কও রয়েছে৷ টাইমস অপ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এখবর জানা যায়।
স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা গত ১৮ নভেম্বর হোয়াইট হাউসে বছর শেষের সংবাদ সম্মেলনে নয়া নজরদারির ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়েছেন৷ তিনি বলেছেন, 'আমাদের আইন প্রয়োগকারী এবং গোয়েন্দা কর্মচারীরা নিয়মিত ভাবে সার্বজনীন (সোশ্যাল মিডিয়া) পোস্টগুলির উপর নজর রাখছেন৷ আর, এটা ভিসা যাচাই করার প্রক্রিয়ার অংশবিশেষ৷' তবে ওবামার দাবি, গণসাধারণের ই-মেল, ব্যক্তিগত কথাবার্তা ('চ্যাট') এবং অন্যান্য বার্তা চালাচালির প্ল্যাটফর্মগুলির (হোয়াটসঅ্যাপের মতো) উপর মার্কিন সরকারের নজরদারির ক্ষমতা নেই৷ সরকারি ভাবে সেই অধিকার পাওয়ারও চেষ্টা চালাচ্ছে মার্কিন প্রশাসন৷ ওবামার কথায়, 'হাই টেক গোষ্ঠীগুলির সঙ্গেও আমরা এ ব্যাপারে কথাবার্তা চালাচ্ছি৷ যাতে আমাদের হাতে সন্দেহভাজন কোনও সন্ত্রাসবাদী সম্পর্কে তথ্য থাকলে, আমরা উপযুক্ত সময়ে আরও ভালো ভাবে পদক্ষেপ নিতে পারি৷' ওবামার এই কথার নিশানা হয়তো ছিল অ্যাপল বা গুগলের মতো সিলিকন ভ্যালির কয়েকটি তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানির দিকেই, যারা অন্তত ঘোষিত ভাবে মানুষের এই 'ব্যক্তিগত পরিসরে' সরকারি নজরদারির বিরোধিতা করে আসছে৷
আসলে, মার্কিন তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, সান বার্নারডিনোতে গণহত্যাকাণ্ড ঘটানো তশফিন মালিক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসার অনেক আগে থেকেই, তার সঙ্গে আইএস-এর মতো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের ভালো যোগাযোগ ছিল৷ ইন্টারনেটে তার কাজকর্ম দেখলেই বোঝা যেত সে জিহাদি মতাদর্শে কতখানি প্রভাবিত হয়ে পড়েছে৷ কিন্তু সে সব খতিয়ে না দেখে তশফিনকে মার্কিন ভিসা দিয়ে দেওয়াটা এখন নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড়সড় ঘাটতি হিসেবেই দেখছে মার্কিন 'ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি'৷ তবে এই দন্তরের সেক্রেটারি জে জনসন সম্প্রতি দাবি করেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ধরনের নজরদারির ক্ষেত্রে কিছু 'আইনি সীমাবদ্ধতা' রয়েছে৷ কিন্তু রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী কারলি ফিয়োরানা এই মন্তব্যের প্রকাশ সমালোচনা করেছেন৷ এই বিতর্কের কথা মাথায় রেখে ওবামা এ-ও বলেছেন যে, নজরদারির 'বাড়াবাড়ি' যাতে না হয়, সে সম্পর্কেও সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে৷ না হলে এনএসএ-র তথ্যফাঁসের মতো বিতর্ক ফের দানা বাঁধতে পারে৷ প্রসঙ্গত, দুনিয়া জুড়ে ইন্টারনেট মাধ্যমে মার্কিন সংস্থা এনএসএ যে ভাবে 'বেআইনি' নজরদারি চালিয়েছিল, সে তথ্য ফাঁস করে দিয়েছিলেন ওই সংস্থারই তত্কালীন কর্মচারী এডোয়ার্ড স্নোডেন৷ তিনি আপাতত রাশিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন৷
২১ ডিসেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই
�