সোমবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২০, ০৯:৫৩:৪২

মমতা ব্যানার্জীর নির্দেশে নাগরিকত্ব আইনের বিরু'দ্ধে বড় আন্দোলনে নামছে বৃহৎ মুসলিম সংগঠন

মমতা ব্যানার্জীর নির্দেশে নাগরিকত্ব আইনের বিরু'দ্ধে বড় আন্দোলনে নামছে বৃহৎ মুসলিম সংগঠন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধন বিল পাশের পর তিন দিন ধরে যখন পশ্চিমবঙ্গে ধু'ন্ধুমার হয়েছিল, তখন রাজ্যের মন্ত্রী তথা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীকে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বই সং'য'ত থাকতে বলেছিলেন। ফলে তারপর সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর পার্টি জমিয়তে উলেমা সিএএ-র বি'রু'দ্ধে বড় কোনও আন্দোলন কর্মসূচিতে নামেনি। 

সূত্রের খবর, সেই তিনি সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকেই এবার তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব ডেকে জানিয়েছে, নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের বি'রু'দ্ধে তাদের শীঘ্র আন্দোলনে নামতে হবে। তবে অশান্তি করলে চলবে না। আন্দোলন হতে হবে শান্তিপূর্ণ। কথা মাত্র কাজ। তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশে ২৩ থেকে ২৫ জানুয়ারি এই তিন দিন এন্টালির রামলীলা ময়দানে গণঅবস্থান করতে চলেছে বৃহৎ মুসলিম সংগঠন জমিয়তে উলেমা। 

সংগঠনের তরফে সোমবার একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে জানানো হয়েছে যে ওই গণ অবস্থানের নেতৃত্ব করবেন মমতা ব্যানার্জীর মন্ত্রিসভার সদস্য মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী। তা ছাড়া বিবৃতিতে এও বলা হয়েছে, 'জমিয়ত যেহেতু বরাবর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসছে, এই প্র'তিবা'দ কর্মসূচিও শান্তিপূর্ণ হবে।' 

সংসদের নাগরিকত্ব সংশো'ধন বিল পাশ হওয়ার পর তিন দিন ধরে পশ্চিমবঙ্গে প্রতিবা'দের নামে যে তা'ণ্ড'ব হয়েছিল তাতে জমিয়তের বি'রু'দ্ধেও অভিযোগের আ'ঙু'ল উঠেছিল। অনেকের মতে, সেই কারণেই 'শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি' শব্দব'ন্ধের উপর জো'র দেওয়া হয়েছে। এখন প্রশ্ন হল, হঠাত্‍ জমিয়ত তথা সিদ্দিকুল্লাকে কেন সিএএ-র বি'রু'দ্ধে আন্দোলনে নামার কথা বললেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব?

শাসক দলের একটি সূত্রের মতে, নাগরিকত্ব সং'শো'ধন আইনের বিরো'ধিতায় তৃণমূলের আন্দোলন যে আ'পসহী'ন সেই বার্তা দিতেই সিদ্দিকুলাহকে আন্দোলনে বসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এর একটা প্রেক্ষাপটও রয়েছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কলকাতা সফরের সময় রাজভবনে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্‍ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। তা নিয়ে মুসলমানদের একাংশের মধ্যে অ'স'ন্তোষ রয়েছে। 

বাম ও কংগ্রেস সেই অসন্তোষে আরও অক্সিজেন দেওয়ার চেষ্টা করছে। এবং তার মাধ্যমে সংখ্যালঘু ভোটের বিভা'জন ঘটাতে চাইছে। হতে পারে তা ঠেকানোর জন্যই সক্রিয় হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, মুখ্যমন্ত্রী নিতান্তই সৌজন্যের খাতিরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় তা ছিল সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা। 

এও মনে রাখতে হবে, প্রশাসনিক বা'ধ্যবা'ধকতা ও রাজনৈতিক বিরো'ধিতার মধ্যে সুক্ষ একটি রেখা রয়েছে। বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়ণের জন্য কেন্দ্রের সঙ্গে সমন্বয় রেখে চলাও জরুরি। নইলে রাজ্যেরই ক্ষ'তি। তবে এও ঠিক যে, রাজনীতি ধারণার ভিত্তিতে চলে। মুসলমানদের মনে অনেকে এই ধারণা তৈরি করে দিতে চাইছেন যে, মোদির সঙ্গে আ'প'স করতে চাইছেন মমতা। 

বাস্তবে তা যে নয়, তা বোঝাতেই হয়তো সিদ্দিকুল্লাহদের পথে নামতে বলেছেন নেত্রী। জমিয়তের এক মুখপাত্রের অবশ্য বক্তব্য, কারও নির্দেশ বা পরামর্শে তারা গণঅবস্থানে বসতে যাচ্ছেন না। জমিয়েত উলেমা একটি স্বাধীন সংগঠন। গত ২২ ডিসেম্বর কলকাতায় তারা নাগরিকত্ব সংশো'ধন আইনের বিরো'ধিতায় ইতিমধ্যেই বড় সভা করেছিল। 

তারপর সংগঠনের মধ্যেই আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে ২৩ তারিখ থেকে তিন দিনের গণঅবস্থান রামলীলা ময়দানে। তাত্‍পর্যপূর্ণ, ২২ জানুয়ারি নাগরিকত্ব সংশো'ধন আইনের বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণা করার কথা। তার পর রামলীলা ময়দানের ওই গণঅবস্থান কতটা প্রাসঙ্গিক থাকবে বা সেখান থেকে তারা কী অবস্থান গ্রহণ করবেন এখন সেটাই প্রশ্ন। সূত্র : দ্য ওয়াল

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে