আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বুকফা'টা কা'ন্না আর আহাজারি, কাঁ'দে দিল্লি কাঁ'দে মানবতা! সেদিন বাবা যখন মুদি দোকানে যাচ্ছিলেন, তিন বছরের মেয়ে হয়তো চকলেটের বায়না ধরেছিল। এক বছরের ছেলেটাও হয়তো আমতা আমতা করে কিছু বলেছিল। গাল দুটোয় আদর দিয়ে বাবা হয়তো বলেছিলেন ‘আচ্ছা’। দুই সন্তানই তাই বাবার পথের দিকে চেয়ে থাকছিল, কখন বাবা কোলে তুলে মুখে চকলেট পুরে দেবেন। কিন্তু সেই বেলা বাবা এলেন না, এলেন না রাতেও। দুই সন্তানকে পিঠে নিয়ে ঘোড়া ঘোড়া খেলা বাবা পরদিনও এলেন না। এলেন বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি), কজন লোকের কাঁধে চড়ে, খাটিয়ায়, সাদা কাপড়ে।
বাবা এভাবে এলেন কেন? তার দে'হটা এমন নি'থর কেন? নাকে-কানে সাদা ওসব কী গুঁ'জে দেয়া? ছেলেটা কিছু বলতে না পারলেও মেয়েটার এমন প্রশ্ন বুক কাঁ'পিয়ে দিচ্ছিল স্বজনদের। কাঁ'পা কাঁ'পা স্বরেই স্বজনরা বললেন, তোমাদের বাবা মা'রা গেছেন। এই শেষবারের মতো এলেন। এবার গেলে আর কখনো আসবেন না তোমাদের কোলে নিতে, তোমাদের আদর করতে, বুকে জড়িয়ে নিতে।
প্রথম বাক্যটা না বুঝলেও ‘আর কখনো আসবেন না’ বুঝে যেন ডুকরে কেঁ'দে উঠলো মেয়েটা। এই কা'ন্নায় যেন গাছের পাতা ঝরে পড়ে, ভারী হয়ে ওঠে আকাশ-বাতাস। সান্ত্বনা দেবেন কী, মেয়েটার কা'ন্নার সঙ্গে যেন হা'উমা'উ করে কেঁ'দে ওঠেন স্বজনরাও। দাফন করতে আসা পড়শীদেরও চোখ টলমল করতে থাকে। স্বয়ং মৌলভী সাহেবও অশ্রু লুকোতে পারেন না।
সাম্প্রদায়িক আইন সিএএ ও এনআরসিকে ঘিরে দিল্লিতে দা'ঙ্গায় প্রাণ হা'রানো অটোরিকশাচালক মুদাসসির খানের ওই স্বজনদের এ কা'ন্নার ছবি এখন ভাইরা'ল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কেউ সে ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘কাঁ'দে দিল্লি কাঁ'দে মানবতা’। কেউ লিখেছেন, ‘এই কান্না বিশ্ববাসীর জন্য অভিশা'প’। আবার কেউ লিখেছেন, ‘এ কা'ন্না ভারতবর্ষের’।
কলকাতার প্রখ্যাত দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা দাঙ্গার নৃ'শং'সতা নিয়ে প্রতিবেদন করেছে এ ছবিটি ওপরে দিয়েই। শিরোনাম করেছে- ‘এ যেন ইন্ডিয়া-পাকিস্তান বর্ডার’! ‘ন'রক হয়ে গেল চেনা রাজধানী’।