শনিবার, ০৭ নভেম্বর, ২০২০, ০৪:৪০:১৩

নজরে চীন' নীতি, বাইডেন প্রশাসনের মনোভাবের প্রভাব ভারতের উপরে পড়তে বাধ্য

নজরে চীন' নীতি, বাইডেন প্রশাসনের মনোভাবের প্রভাব ভারতের উপরে পড়তে বাধ্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বারাক ওবামার আট বছর প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন তিনি ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। ফলে ভারতের কাছে জো বাইডেন পরিচিত মুখই। আশা করা হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরে কয়েকটি ক্ষেত্রে তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেখানো পথেই হাঁটবেন, আবার কিছু ক্ষেত্রে তা বদলাতে পারে।

প্রতিরক্ষা, কৌশলগত এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলিতে ২০০০ সাল থেকেই ভারতের প্রতি আমেরিকার নীতি খুব একটা বদলায়নি। আশা করা হচ্ছে জো বাইডেনও সেই পথেই হাঁটবেন। তবে চীনের প্রতি বাইডেন প্রশাসনের মনোভাব কী হয়, সেদিকে তাকিয়ে থাকবে ভারত। কারণ, তার প্রভাব ভারতের উপরে পড়তে বাধ্য। তবে বাইডেনের আমলেও ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে ঝুলে বাণিজ্যিক সমস্যাগুলির খুব বেশি সমাধান হবে বলে মনে করা হচ্ছে না। একনজরে দেখে নেওয়া যাক, বাইডেনের আমলে কোন পথে এগোতে পারে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক:

বাইডেন- হ্যারিস যুগলবন্দি : জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ভাইস প্রেসিডেন্ট হবেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিস। বাইডেন প্রশাসনের নীতি নির্ধারণে তিনি বড় ভূমিকা নিতে পারেন বলেই মনে করা হচ্ছে। বাইডেন ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হলেও একবারের জন্যই মেয়াদে থাকবেন তিনি। ফলে ২০২৪-এর নির্বাচনে কমলা হ্যারিসই প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হবেন বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক সহ বিভিন্ন বিষয়ে কী নীতি নেন, সেদিকে নজর রাখতেই হবে।

বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সম'স্যার মো'কাবিলা প্রচারে ভারতীয়-মার্কিন ভোটারদের কাছেও সমর্থনের আবেদন করেছিলেন বাইডেন। ভারতের প্রতি তার মনোভাব আপাতদৃষ্টিতে ইতিবাচক বলেই মনে করা হয়। ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এখন যে জায়গায় পৌঁছেছে, তাকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করা বাইডেনের পক্ষেও সম্ভব নয়। বাইডেনের হয়ে কৌশল নির্ধারণের দায়িত্বে থাকা অ্যান্টনি ব্লিনকেনের মতে, ভারতকে বাদ দিয়ে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন চ্যালে'ঞ্জের মো'কাবিলা করা সম্ভব নয়।

তার দাবি, বাইডেনের আমলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও মজবুত এবং উন্নত করা অন্যতম অগ্রাধিকারের বিষয় হতে চলেছে। প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা ২০০০ সাল থেকেই প্রতিরক্ষা এবং কৌশলগত ভাবে আমেরিকার ভারত নীতিতে বিশেষ বদল আসেনি। বাইডেনের আমলেও তাতে পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম।

চীনের সঙ্গে সম্পর্ক চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে বাইডেন পন্থীরা দু' ভাগ। এর প্রভাব আমেরিকা-ভারত এবং ভারত-চিন সম্পর্কের উপরে পড়তে বাধ্য। বাইডেনের পরামর্শদাতাদের একাংশ ট্রাম্পের মতোই তীব্র চীন বিরোধী। আবার একাংশের মতে, আমেরিকা এবং চীনের অর্থনীতিকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করা অসম্ভব। ফলে খুব বেশি হলে জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত ক্ষেত্রগুলিতে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক পুরোপুরি ছিন্ন করার দিকেই হাঁটতে পারে বাইডেন প্রশাসন।

বাণিজ্যিক সম্পর্ক ক্ষমতায় যেই থাকুন না কেন, ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্যিক সমস্যা মেটা মুশকিল। এমন কি বারাক ওবামার আমলেও দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে বিবাদ ছিলই। ফলে বাইডেনের আমলে আমেরিকা ভারতের জন্য দ্বার উন্মুক্ত করে দেবে, এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তাছাড়া, প্রচার পর্বেই বাইডেন ফের আমেরিকার অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার ডাক দিয়েছেন। 

বাইডেনের অন্যতম শীর্ষ পরামর্শদাতা বিল বার্নসও জানিয়েছেন, আমেরিকার বিদেশ নীতি এমন হওয়া উচিত যাতে দেশীয় উত্‍পাদন এবং ব্যবসা চাঙ্গা হয়।' মানবাধিকারে নজর তবে ভারতে যে ভাবে হিন্দুত্ববাদীদের দাপট বাড়ছে এবং বহু ক্ষেত্রে মানবাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ উঠছে, তার বিরুদ্ধে তত্‍পর হতে পারে বাইডেন প্রশাসন। জম্মু কাশ্মীরের বিভিন্ন ঘটনাও নজরে রাখতে পারে তারা। 

বিশেষ মার্কিন কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাটরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ার পর ভারতে মানবাধিকার রক্ষার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পেতে পারে। এইচ ওয়ান বি ভিসা H-1B ভিসা ফের আগের অবস্থায় ফিরবে, এমন সম্ভাবনাও ক্ষীণ। বিশেষত করোনা অতিমারির পর রিমোট ওয়ার্কিং-এর প্রবণতা বৃদ্ধির পর এইচ ওয়ান বি ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসন উদার মনোভাব নেবে, সেই প্রত্যাশা না করাই ভাল।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে