আন্তর্জাতিক ডেস্ক : একটু একটু করে একটা নতুন স্বপ্ন বুনেছিলেন আফগানরা। সেই স্বপ্ন ভাঙতে সময় নিলো মাত্র তিন মাস। গোটা আফগানিস্তান এখন তালেবানের দখলে। তাদের ভয়ে প্রাণপণে দেশ ছেড়ে পালাতে শুরু করেছেন আফগান জনতার একাংশ। কী ভয়ানক আবহ তৈরি হয়েছে, তালেবানের রক্তচক্ষুর সামনে কী ভাবে হুড়মুড়িয়ে কাবুলের পতন হয়েছে।
সেই বর্ণনা দিতে দিতেই শিউরে উঠছিলেন আফগানিস্থানের কনিষ্ঠতম মেয়র যিনি সে দেশের প্রথম মহিলার মেয়র জারিফাও। বললেন, “এখন কবে আমাকে খুন করবে তালেবান জঙ্গিরা, সেই অপেক্ষাতেই রয়েছি!” বয়স ২৭। আশরাফ গনি সরকারের কর্মী। গনি দেশ ছেড়েছেন আগেই। কিন্তু অসহায়, করুণ অবস্থার মধ্যে পড়ে গিয়েছেন সরকারী কর্মীরা। কেউ কেউ পালাতে সক্ষম হয়েছেন। কিন্তু জারিফার মতো অনেকেরই সেই সৌভাগ্য হয়নি। আর তারাই এখন এক মহাবিপদের প্রমাদ গুনছেন।
এক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জারিফা বলছিলেন, ''গনি সরকারের অনেক শীর্ষ স্তরের কর্মকর্তারাই পালিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছেন, কিন্তু আমার তো যাওয়ার জায়গা নেই। তাই এখানে বসেই অপেক্ষা করছি তালেবান জঙ্গিরা কখন আসবে, আমাকে খুন করবে! আমাদের সাহায্য করার কেউ নেই। পরিবারের সঙ্গে বসে অপেক্ষা করা ছাড়া আরও কোনও উপায় দেখছি না। তালেবান জঙ্গিরা আমার মতো মানুষকে খুঁজতে খুঁজতে ঠিক এখানে হাজির হবে।''
জারিফার কথায়, “সব কিছুই ঠিকঠাক চলছিল। মুহূর্তে যেন সব ওলটপালট হয়ে গেল। যে স্বপ্ন নিয়ে দেশ এগোচ্ছিল তা ভেঙে খান খান হয়ে গিয়েছে এক লহমায়।” চার দিকে শুধু হাহাকার, বাঁচার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা। তালেবানি ফতোয়া জারি হয়ে গিয়েছে দেশের কোণায় কোণায়। এই পরিস্থিতিতে তার মতো মহিলাদের বাঁচার আশা ক্রমে ক্ষীণ হচ্ছে। এর আগেও অবশ্য বেশ কয়েক বার তালেবানের হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে জারিফাকে। তিন বার তার উপর হামলা চালানো হয়েছিল। কিন্তু ব্যর্থ হওয়ায় শেষমেশ গত বছরের ১৫ নভেম্বর জারিফার বাবা জেনারেল আবদুল ওয়াসি গাফারিকে খুন করে তালেবান।