মঙ্গলবার, ০৯ আগস্ট, ২০২২, ০৭:৫২:১১

সবজি চাষ লাখ টাকা বেতনের চাকরি ছেড়ে, এখন বছরে গীতাঞ্জলির আয় ৪ কোটি টাকা

সবজি চাষ লাখ টাকা বেতনের চাকরি ছেড়ে, এখন বছরে গীতাঞ্জলির আয় ৪ কোটি টাকা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কৃষিকার্যে নেই কোনো স্থায়ী আয়। খরা বা বন্যার মত প্রাকৃতিক কারণে হতে পারে প্রভূত ক্ষতি। যে কারণে বারবার বিরাট অংকের লোকসান হয় তাদের। 

কিন্তু বর্তমানে প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে দূর করা যেতে পারে এই সমস্যা। বর্তমানে আগ্রহ বাড়ছে জৈব পদ্ধতিতে চাষের প্রতি। কিন্তু তাই বলে বিরাট অংকের নিশ্চিন্ত জীবনের চাকুরী ছেড়ে কি কেও সহজে চাষ করতে চাইবেন?

তার নাম গীতাঞ্জলি রাজামণি। তার জন্ম কেরলে হলেও ছোটো থেকেই তিনি থেকেছেন হায়দ্রাবাদে। পেয়েছিলেন TCS-র মত আন্তর্জাতিক কোম্পানিতে উচুঁ পদের চাকুরী। কিন্তু সেই চাকরি ছেড়ে দিয়ে শুরু করেন সবজি চাষ। শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও তিনি বাস্তবে করে দেখিয়েছেন

গীতাঞ্জলির যখন মাত্র দুই বছর বয়স তখনই তার বাবা সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। তিনি বড় হয়ে ওঠেন তার মা এবং ভাই-র কাছে। ২০০১ সালে বিজ্ঞানে স্নাতক হওয়ার পর ২০০৪ সালে এমবিএ করেন পদুচেরি থেকে। প্রায় ১২ বছর কাজ করেছেন একটি কোম্পানিতে। এরপর গীতাঞ্জলি পেয়ে যান টিসিএস কোম্পানিতে ভালো বেতনের চাকরি।

সেখানে তিনি গ্লোবাল বিজনেস রিলেশনশিপ ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেন। এই কাজ থেকে তিনি শিখেছেন অনেক কিছু। কিন্তু এরপরই ২০১৪ সালে তিনি ছেড়ে দেন এই চাকরি। এই সময়ের মধ্যেই বিয়েও হয়ে যায় তার। 

এবার তিনি শুরু করলেন নিজের ব্যবসা। তিনি লক্ষ্য করলেন বাজারে অর্গানিক নাম দিয়ে চলছে প্রতারণা। এরপর ২০১৭ সালে শুরু করেন তার নিজস্ব কৃষি সংস্থা। যারা একদম সঠিকভাবে অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষ করে।

গীতাঞ্জলি আজ জৈব পদ্ধতিতে চাষের এক বহুল পরিচিত নাম। হায়দ্রাবাদ, ব্যাঙ্গালোর এবং সুরাটের মতো বিভিন্ন শহরে ৪৬ একর জমিতে জৈব চাষ করেন তিনি। এরই সাথে পেয়েছেন বহু বড় বড় কোম্পানির থেকে অর্থনৈতিক সাহায্য। 

গীতাঞ্জলি ভারতের কৃষকদের জৈব ও প্রাকৃতিক চাষের দিকে ঝুঁকতে অনুরোধ করেন। তিনি বলেন রাসায়নিক সার শুধুমাত্র মানুষেরই নয় দীর্ঘ সময়ে ক্ষতি করে জমিরও। ফলন পরবর্তীকালে কমে যায় অনেকাংশে। ভারতের মাটি কৃষির জন্য সবচেয়ে ভালো হলেও রাসায়নিক সারের কারণে তা ক্ষয় হচ্ছে।

বর্তমানে গীতাঞ্জলি বছরে আয় করছেন ৪ কোটি টাকা। ২০১৭ সালে তিনি নিজের ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। আজ প্রায় ১৬ হাজারের বেশি গ্রাহক সবজি কেনেন তার কাছ থেকে। 

লকডাউনের সময়ও গীতাঞ্জলির ব্যবসা ছিল জমজমাট। বর্তমান দিনে বাজারে টিকে থাকতে গীতাঞ্জলি তৈরি করেছেন একটি অ্যাপ। যার মাধ্যমে তিনি বাড়িতে সবজিও পৌঁছে দেন।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে