আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জিকা ভাইরাসের প্রকোপে কাঁপছে গোটা বিশ্ব। এর ফলে নতুন করে আলোচনা এসেছে ছেট্ট মশা। ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া এবং আরও প্রাণঘাতী রোগ ছড়িয়ে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটায় এই প্রাণিটি। মানুষ এবং মশার মধ্যে এই দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে জৈব প্রযুক্তি এরই মধ্যে একটি বড় ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছে।
সপ্তাহের প্রতি কর্মদিবসে সকাল ৭টায় দক্ষিণ ব্রাজিলের শহর পাইরাছিকাবা দিয়ে একটি মশাবাহী কার্গো নিয়ে একটি ভ্যান যায়। প্রায় এক লাখ মশাবাহী কার্গোটি থেকে মশাগুলোকে ভ্যানের জানালা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় এবং মশাগুলো তাদের সঙ্গীদের খুঁজতে উড়ে যায়। কিন্তু এই মশাগুলো কোনো সাধারণ মশা নয়। জেনিটিক্যালি ইঞ্চিনিয়ার্ড এসব মশার বংশবিস্তার করানো হয় যাতে তারা তাদের সন্তানদের মধ্যে প্রাণঘাতী জিন দিতে পারেন যা তাদের পূর্ণবয়স্ক হওয়ার আগেই মেরে ফেলবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মশা নিরোধের জন্য নতুন কোনো পদ্ধতির প্রয়োজন। কারণ, কীটনাশক এবং জমে থাকা পানি সরিয়ে ফেলার মতো কাজগুলোতে বড় পরিসরের কোনো উপকার হচ্ছে না।
ছোট্ট পরীক্ষায় দেখা গেছে এ পদ্ধতি মশার বংশবিস্তার শতকরা ৮০ ভাগ পর্যন্ত কমিয়ে দিয়েছে।
সাও পাওলোর সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আরতুর টাইমারম্যান বলেন, প্রায় তিন দশক ধরে আমরা এভাবে মশা নিধনের কাজ করে যাওয়ার পরও গত বছর ব্রাজিলে প্রায় দুই মিলিয়ন মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।
সুতরাং গুরুতরভাবে নতুন পদ্ধতি ব্যবহার আবশ্যক। কিন্তু নতুন পদ্ধতিতে যে কার্যকর সেটা আগে প্রমাণিত হতে হবে এবং তার জন্য কয়েক বছর সময়ের প্রয়োজন। জিকার ভাইরাসের বিরুদ্ধেও লড়াইয়ের জন্য 'কত্রিম মশা' উদ্ভাবনের কথা কথা ভাবা হচ্ছে। তবে জিকার সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য ভ্যাকসিন খুব তাড়াতাড়ি আবিষ্কার হচ্ছে বলে আশা করা যাচ্ছে না।
ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান অক্সিটেকে জেনেটিক্যালি ইঞ্চিনিয়ার্ড মশা আয়েডেস ইজিপটিকে উন্নতকরণ করেন যা ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য ব্যবহৃত হতো তবে জিকা প্রতিরোধেও এটি বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।
০১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস