আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আজকাল ফোনের ব্যবহার সর্বত্র। ফোনহীন পৃথিবী কল্পনাও করা যায় না। বাজারে তাই বিভিন্ন কোম্পানি নানা মডেলে নিত্যনতুন ফিচার যোগ করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে।
এসব ফোনের মধ্যে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া মোবাইল সংস্থার নাম কিংবা তার মডেল কোনটি—এ নিয়ে প্রশ্ন আসতেই পারে। উত্তর যদি হয় এ যুগের কোনো নামীদামি কোম্পানির মোবাইল ফোন যেমন অ্যাপল, স্যামসাং, ওয়ান প্লাস, সনি, অপো, ভিভো বা অন্য কোনো মোবাইল প্রস্তুতকারক সংস্থার জনপ্রিয় কোনো মডেল? তাহলে কিন্তু ভুল হবে। খোলাসা করি, এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া ফোনটি কোনো স্মার্টফোন নয়। তাহলে কোনগুলো। চলুন, জেনে নিই—
বুলগেরিয়ান-আমেরিকান ডিজাইনার দিমিত্র মেহাডিস্কির ডিজাইনে ২০০৩ সালের ১৩ অক্টোবর নকিয়া বাজারে আনে মডেল ১১০০। নাইজেরিয়ায় প্রথম বিক্রি শুরু করলেও দ্রুত উন্নয়নশীল বিশ্বের মানুষের কাছে এই ফোন খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ২০০৫ সালে নকিয়া ১১০০ বিক্রির মাধ্যমে নকিয়ার এক বিলিয়ন ফোন বিক্রয় সম্পূর্ণ হয়।
কল করা, বার্তা পাঠানো এবং অ্যালার্ম ঘড়ি ছাড়া অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তির কোনো প্রয়োজনীয়তা যাঁদের ছিল না, ফ্লাশলাইট ও স্নেক গেমসমৃদ্ধ এই ফোন তাঁদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। আর এই মোবাইলের জনপ্রিয়তার আরেকটি কারণ ফোনটিতে পরিষ্কার স্বরে কথা শোনা যেত। ফোনটি বিশ্বব্যাপী ২৫০ মিলিয়নের বেশি বিক্রি হয়।
জার্মানিতে তৈরি হওয়া নকিয়া ১১০০ কিছু মডেলের সফটওয়্যারে একধরনের ত্রুটি ধরা পড়ে। ২০০৯ সালে নকিয়া ১১০০ উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়। অন্য ফোনের সেনসিটিভ মেসেজ, যেমন অনলাইন ব্যাংকিংয়ের তথ্যসমূহ সংগ্রহ করতে সক্ষম কিছু কিছু মডেল এমনভাবে প্রোগ্রাম করা হয়েছিল। এ রকম কিছু নকিয়া ১১০০ মডেল ৩২ হাজার ডলারের অধিক মূল্যে বিক্রি হয়েছিল!
নকিয়া ১১০০ এর জনপ্রিয়তা মাথায় রেখেই ২০০৫ জুনে বাজারে আসে নকিয়া ১১১০ ফোনটি। সাদাকালো পর্দার সঙ্গে হলদে-বাদামি রঙের ব্যাকলাইট। ২০০৭ সালের জানুয়ারি এবং মে মাসের মাঝামাঝি ১১১০ মডেলটি নকিয়ার স্বল্প মূল্যের মনোক্রোম মডেল হিসেবে বিক্রি হয়। নকিয়া ১১০০ এর মতো নকিয়া ১১১০ মডেলও বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া ফোন, যা বিক্রি হয় প্রায় ২৪৮ মিলিয়ন ইউনিট।
স্মার্টফোনের কথা বললে প্রায় সবারই প্রথম যে ফোনের নাম মনে আসে, সেটি নিঃসন্দেহে অ্যাপল। ২০১৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ফ্লিন সেন্টারের একটি ইভেন্টে আইফোন ৬ এবং আইফোন ৬ প্লাস ফোন দুটি প্রকাশের ঘোষণা দেওয়া হয় এবং একই বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়। ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ফোন দুটির প্রি-অর্ডার শুরু হয়।
আইফোন ৬ এর মূল্য ৬৪৯ ডলার ও আইফোন ৬ প্লাসের মূল্য ৭৪৯ ডলার থেকে শুরু হয়। রিলিজ হওয়া ডিভাইস দুটি প্রথম তিন দিনেই ১০ মিলিয়নের বেশি বিক্রি হয়েছিল। এই সাফল্যের অন্যতম কারণ হচ্ছে ফোনটির অসাধারণ ডিসপ্লে। ওজন মাত্র ১২৯ গ্রাম। এখন পর্যন্ত ২২২ মিলিয়ন ইউনিটের বেশি বিক্রি হয়েছে। আইফোন ৬ এবং ৬ প্লাস দিয়ে অ্যাপল যে উন্মাদনা সৃষ্টি করেছে মোবাইল ফোন জগতে, তা এখনো চলছে।