আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গৃহবধূর ওপর নির্মম অত্যাচারের বদলা নিলেন প্রতিবেশী মহিলারা। অভিযুক্ত শ্বশুরকে প্রকাশ্যে জুতা, ঝাঁটা দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। গৃহবধূর বাবা কোতোয়ালি থানায় মেয়ের শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূর ওপর নৃশংস অত্যাচার চালাতেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। অত্যাচারের বাড়াবাড়িতে ওই গৃহবধূকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। এ নির্মম অত্যাচারের বদলা নিলেন প্রতিবেশী মহিলারাই। অভিযুক্ত শ্বশুরকে প্রকাশ্যে ঝাঁটাপেটা করা হয় পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর সদর ব্লকের মালিদা গ্রামে।
মেদিনীপুরের কোতোয়ালি থানার অন্তর্গত মালিদা গ্রামের রিয়া মল্লিকের সঙ্গে গ্রামেরই বিনোদ ভুঁইঞার বিয়ে হয়েছিল আড়াই বছর আগে৷ বিয়ের কিছুদিন পরই বাড়তি যৌতুকের দাবিতে রিয়ার ওপর অত্যাচার শুরু করে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন৷
এক বছর আগে ওই গৃহবধূর একটি কন্যাসন্তান হওয়ায় অত্যাচারের মাত্রা আরো বেড়ে যায়৷
নিয়মিত রিয়াকে মারধর ও গালিগালাজ করতেন তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন৷ ২৯ জানুয়ারি সেই অত্যাচার চরম আকার ধারণ করে৷ রুটি কিছুটা পুড়ে যাওয়ার অজুহাতে গরম খুন্তি দিয়ে রিয়ার মুখের বিভিন্ন অংশে ছ্যাঁকা দেয়া হয়৷ শুধু তাই নয়, লাঠি দিয়ে মেরে পানিতেও চোবানো হয় তাকে।
অত্যাচারের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে ওই গৃহবধূর বাপের বাড়ির লোকজন তাকে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। রাতেই ওই গৃহবধূর বাবা কোতোয়ালি থানায় মেয়ের শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
অবস্থা বেগতিক দেখে সেই দিনই ওই গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। শনিবার সকালে বাড়িতে ফেরেন অভিযুক্ত শ্বশুর গোবিন্দ ভুঁইঞা। কিন্তু তিনি বোধহয় ভাবতেও পারেননি প্রতিবেশী মহিলারা তার ফেরার অপেক্ষাতেই ছিলেন।
জুতা, ঝাঁটা নিয়ে শ্বশুরমশাইয়ের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন এলাকার মহিলারা। বেশ কিছুক্ষণ উত্তম-মধ্যম দেয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ করে গ্রামবাসী। শেষ পর্যন্ত গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে অভিযুক্ত শ্বশুরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
রিয়া আর শ্বশুরবাড়িতে ফিরতে চান না। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের চরম শাস্তি দাবি করেছেন তিনি। আর কোনো গৃহবধূর ওপর যাতে শ্বশুরবাড়ির লোকজন অত্যাচার করার সাহস না পায়।
৭ ফেব্রুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম