আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বর্ষা মানেই ভোজনরসিক বাঙালির রসনা তৃপ্ত করতে বাজারে হাজির হবে নোনা জলের রুপোলি ফসল। কোল্ড স্টোরেজ বা মায়ানমার থেকে চালানি মাছ নয়, পাতে পড়বে টাটকা-তাজা ইলিশ।
গত ১৫ জুন কাকদ্বীপ, নামখানার মৎস্য বন্দর থেকে ট্রলারগুলি ইলিশ ধরতে পাড়ি দিয়েছিল সমুদ্রে। খারাপ আবহাওয়ার কারণে বেশিরভাগ ট্রলাকরেই ফিরতে হয়েছে অল্পস্বল্প ইলিশ নিয়ে। পরিমাণ দেখে তাঁরা উচ্ছ্বসিত না হলেও তাঁদের মন ভরিয়েছে ইলিশের সাইজ। মৎস্যজীবীদের দাবি, ন্যূনতম ৫০০ থেকে ৯০০ গ্রাম, এমনকী এক- দেড় কেজি ওজনের ইলিশও ধরা পড়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছর মরশুমের শুরু থেকে খোকা ইলিশে ছেয়ে গিয়েছিল বাজার। ১০০-১৫০ থেকে ২৫০ গ্রাম ওজনের মাছ ধরে ফিরতে হয়েছিল বহু ট্রলার। এর ফলে পরবর্তী সময়েও খুব বেশি বড় সাইজের ইলিশ পাওয়া যায়নি। হতাশ হয়েছিলেন মৎস্যজীবী, ব্যবসায়ী থেকে মধ্যবিত্ত।
এবার পরিস্থিতি দেখে তাঁরা বলছেন, শুরুটা অন্তত গতবারের তুলনায় অনেকটা ভালো হল। শুক্র ও শনিবার নামখানা ও কাকদ্বীপ মৎস্য বন্দরের ট্রলারগুলি সব মিলিয়ে প্রায় ৩০ টন ইলিশ এনেছে। এই পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই কম।
এই অবস্থায় মৎস্যজীবীদের দুশ্চিন্তা কমিয়েছে মাছের সাইজ। গড়ে ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ধরা পড়েছে। স্বভাবতই ভালো দাম পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী তাঁরা। আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হলে ফের সমুদ্রে পাড়ি দেবেন মৎস্যজীবীরা। বৃষ্টি বাড়লে মাছের পরিমাণ বাড়বে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। কারণ, এখন জলের লবণত্ব বেশি থাকার কারণে মাছের ঝাঁক পাড়ের দিকে আসছে না। বর্ষা বাড়লে মিষ্টি জলের জোগানও বাড়বে। তখন বেশি ইলিশ আসবে। তাছাড়া এখন বাংলাদেশের দিকে স্রোত রয়েছে। কিছুদিন পর পূবালি বাতাস বইতে শুরু করলে ইলিশ ধরার অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে আশাবাদী মৎস্যজীবীরা।
কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক বিজন মাইতির কথায়, ‘এবার শুরুতেই মাছের সাইজ ভালো পাওয়া যাচ্ছে। এই প্রবণতা আগামীতেও থাকলে দামও ভালো পাওয়া যাবে।’ ডায়মন্ডহারবারের নগেন্দ্র বাজারে প্রথম ইলিশ ঢুকেছে শুক্রবার রাতে। সেখানেও মাছের গড় ওজন ৭০০-৮০০ গ্রাম। এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশও এসেছে কয়েকজন আড়ৎদারের কাছে। শুরুর সময়ের এই ‘ট্রেন্ড’ গোটা বর্ষার মরশুমে বজায় থাকে কি না, সেটাই এখন দেখার।