আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। ট্রাম্প বলেছেন, গুলি তার কানে লেগেছে এবং আঘাতের পর বুলেটটি তার চামড়া ছিঁড়ে বেরিয়ে গেছে বলে মনে হয়েছে।
স্থানীয় সময় শনিবার পেনসিলভানিয়ায় একটি সমাবেশে ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে হওয়া এই হামলাকে মার্কিন রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতার মধ্যে একটি হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে। আর এরপরই প্রশ্নের মুখে পড়েছে মার্কিন সিক্রেট সার্ভিস।
এমনকি গুলিবর্ষণ করার আগে হামলাকারী বা তার অবস্থান সম্পর্কে কিছুই জানতো না যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। রোববার (১৪ জুলাই) এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর আগ পর্যন্ত এফবিআই অদূরে একটি ভবনের ছাদে থাকা ব্যক্তি সম্পর্কে কিছুই জানতো না। সংবাদ সম্মেলনের সময় এফবিআই নিশ্চিত করেছে, গুলি না চালানো পর্যন্ত ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমাবেশের কাছাকাছি একটি ভবনের ছাদে অবস্থানরত হামলাকারী ব্যক্তি থাকার কথা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা জানতেন না।
হামলাকারী স্নাইপারের অবস্থান সম্পর্কে এফবিআই আগে থেকে কিছু জানতো কিনা, একজন সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে এফবিআইয়ের স্পেশাল এজেন্ট কেভিন রোজেক একথা বলেন।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসিকে বলেছেন, গুলি চালানোর কয়েক মিনিট আগে তিনি পাশের একটি ভবনের ছাদে একজন ব্যক্তিকে দেখেছিলেন। তিনি ‘তিন থেকে চার মিনিট’ ধরে পুলিশকে বিষয়টি জানানোর চেষ্টা করেছেন, কিন্তু ছাদের ঢালের কারণে তারা সম্ভবত বন্দুকধারীকে দেখতে পাননি।
বিবিসি বলছে, পেনসিলভেনিয়ায় প্রচার সমাবেশে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হওয়া আক্রমণটি আপাত নিরাপত্তার ত্রুটি সামনে এনেছে এবং কেউ কেউ আক্রমণকারীর সেখানে পৌঁছে যাওয়া এবং হামলার জন্য সিক্রেট সার্ভিসের দিকে আঙুল তুলেছেন।
যদিও হামলার পরপরই দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই সিক্রেট সার্ভিস এবং অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। কিন্তু অনেকেই এই ঘটনায় প্রশ্ন তুলছেন এবং কেউ কেউ আবার এটিকে সিক্রেট সার্ভিসের ‘সম্পূর্ণ ব্যর্থতা’ বলে অভিহিত করছেন।
ট্রাম্পের ওপর হামলার ঘটনায় হাউস সম্পূর্ণ তদন্ত পরিচালনা করবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মার্কিন হাউস স্পিকার মাইক জনসন। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেছেন: ‘আমেরিকান জনগণের সত্য জানার অধিকার রয়েছে।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘আমাদের সিক্রেট সার্ভিসের ডিরেক্টর কিম্বার্লি চিটল এবং ডিএইচএস ও এফবিআইয়ের অন্যান্য কর্মকর্তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাদের কমিটির সামনে শুনানির জন্য হাজির হবেন।’
এছাড়া সিক্রেট সার্ভিস হাউস ওভারসাইট কমিটিকে হামলার বিষয়ে ব্রিফ করতে সম্মত হয়েছে বলেও একজন মুখপাত্র দ্য হিলকে নিশ্চিত করেছেন।
সিক্রেট সার্ভিসের অবসরপ্রাপ্ত সুপারভাইজার ববি ম্যাকডোনাল্ড রয়টার্সকে বলেছেন, ‘তিনি (ট্রাম্প) খুব শক্তিশালী নিরাপত্তা পান যা সর্বদা তার সাথে থাকে। কিন্তু তিনি উপলব্ধ বিভিন্ন সম্পদ-সরঞ্জামের সবগুলো পান না। তাই, আমি মনে করি এই ঘটনার কিছু দিক রয়েছে যা তদন্ত করা হবে।’
ববি ম্যাকডোনাল্ড আরও বলেন, ‘সিক্রেট সার্ভিস এখন দেখবে আসলে কী ঘটেছে এবং কীভাবে তারা নিজেদের আরও উন্নত করতে পারে এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করার জন্য তাদের প্রতিরক্ষামূলক পদ্ধতিগুলোও উন্নত করতে পারে।’