এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সদস্য দেশগুলোর বৈঠক রয়েছে অক্টোবরে। এবারের বৈঠক আয়োজিত হচ্ছে পাকিস্তানে। ভারতের পক্ষ থেকেও প্রতিনিধি থাকবেন সেখানে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর পাকিস্তানে যাবেন এসসিও বৈঠকে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে।
তবে সেখানে দ্বিপক্ষীয় কোনো আলোচনা যে হবে না, তা শনিবার স্পষ্ট করে দিলেন তিনি। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
জয়শঙ্কর স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, বহুপক্ষীয় আলোচনায় যোগ দিতে পাকিস্তানে যাচ্ছেন, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছেন না। দিল্লিতে শনিবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘এই বৈঠক নিয়ে সংবাদমাধ্যমগুলোর বেশ কৌতুহল রয়েছে।
হয়তো দুই দেশের সম্পর্ক যে পর্যায়ে রয়েছে, সেই কারণে এই কৌতুহল। কিন্তু আমি স্পষ্ট করতে চাই, এটি একটি বহুপক্ষীয় আলোচনা। আমি কোনো দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় যোগ দিতে যাচ্ছি না। সেখানে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়ে কোনো আলোচনা করতে যাচ্ছি না। এসসিওর একজন সদস্য হিসেবে আমি সেখানে যাচ্ছি।’
আগামী ১৫-১৬ অক্টোবর পাকিস্তানের ইসলামাবাদে এসসিও সদস্য রাষ্ট্রগুলোর বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। পাকিস্তানে আয়োজিত ওই বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে যে পাঠানো হবে, তা নিয়ে কয়েক দিন ধরেই জল্পনা চলছিল। শেষে শুক্রবারই সরকারিভাবে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয় এই বিষয়ে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, ইসলামাবাদে ভারতীয় প্রতিনিধিদলকে নেতৃত্ব দেবেন জয়শঙ্কর।
পরে এই সফর প্রসঙ্গে শনিবার প্রশ্ন করা হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমার পাকিস্তান যাওয়ার কথা রয়েছে এই মাসের মাঝামাঝি সময়ে। এসসিও সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সরকারের বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছি। সাধারণত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে (রাষ্ট্রনেতাদের বৈঠকে) প্রধানমন্ত্রী যান। সরকারগুলোর বৈঠকে কোনো এক মন্ত্রী যান, সেটি পরিবর্তন হতে থাকে। এটিই রেওয়াজ। এবারের বৈঠক পাকিস্তানে হচ্ছে। কারণ, তারাও ওই মঞ্চের সদস্য রাষ্ট্র।’
গণমাধ্যমটির তথ্য অনুসারে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অনুপস্থিতিতে এসসিওর বৈঠকে দিল্লি থেকে অন্য কোনো প্রতিনিধি যাওয়ার নিদর্শনও রয়েছে। যেমন চলতি বছরের ৩-৪ জুলাই কাজাখাস্তানে এসসিওর বৈঠকে থাকেননি মোদি। তার বদলে ভারতের হয়ে সেবারও প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন জয়শঙ্কর। গত বছর ভারতের গোয়ায় যখন সাহাই কো-অপারেশনের বৈঠক হয়েছিল, তখনো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ সে দেশে যাননি। তিনি পাঠিয়েছিলেন তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিকে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাশ্মীর সমস্যা থেকে শুরু করে পাকিস্তান থেকে জঙ্গি অনুপ্রবেশ—একাধিক বিষয়ে এই দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে অস্থিরতা রয়েছে। এমনকি দ্বিপক্ষীয় কূটনৈতিক আলোচনা তো দূরে থাক, দ্বিপক্ষীয় ক্রিকেটও বন্ধ রয়েছে দুই দেশের। সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ার অভিযোগে সাম্প্রতিক অতীতে একাধিক আন্তর্জাতিক মঞ্চে নাম না করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ভারত। এমন অবস্থায় এসসিওর বৈঠকে সদস্য দেশগুলোর বৈঠকে পররষ্ট্রমন্ত্রীর পাকিস্তান সফর ঘিরে কৌতুহল বৃদ্ধি পেয়েছে কূটনৈতিক মহলে।